
ন্যাশনাল ডেস্ক: দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন তিন হাজার ৪৮৯ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ১৯৭ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৭২ হাজার ১৩৪ জন।
আজ বুধবার (৮ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁদের মধ্যে ৩৮ জন পুরুষ এবং আটজন নারী। এঁদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে দুজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৬ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে তিনজন এবং ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ১৯৭ জনের।
এ পর্যন্ত যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৭৪১ জন এবং নারী ৪৫৬ জন।
জানানো হয়, নতুন যে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগের তিনজন, খুলনা বিভাগের ৯ জন, বরিশাল বিভাগের তিনজন, সিলেট বিভাগের চারজন এবং রংপুর বিভাগের একজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৮ জন এবং বাসায় আটজন।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৭৩৬ জন। এ নিয়ে দেশের করোনা সংক্রমণ থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮০ হাজার ৮৩৮ জন।
ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৫ হাজার ৮৮৩টি। একই সময় আগের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৭২টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে তিন হাজার ৪৮৯ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে এক লাখ ৭২ হাজার ১৩৪ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আট লাখ ৮৯ হাজার ১৫২টি।
সারা দেশের করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল সম্পর্কে তথ্যে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যার সংখ্যা ছয় হাজার ৩০৫টি এবং আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১৪২টি, সারা দেশে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৪ হাজার ৯৪৫টি, সারা দেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৪টি এবং সারা দেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ হাজার ৭৬৪টি।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, করোনা সন্দেহে নমুনা পরীক্ষায় রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) সরকারি সহায়তায় একটি ল্যাব প্রথম থেকেই পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আরো একটি পরীক্ষাগার চালু হয়েছে। এটি হচ্ছে আইসিডিডিআরবি মলিকুলার ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি। এ নিয়ে মোট পরীক্ষাগারের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৫টিতে।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৭৯২ জনকে। একই সময় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮০৯ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৩৩ হাজার ১৪৩ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১৬ হাজার ২৮৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৮৫৬ জন।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন দুই হাজার ৬৯১ জন। একই সময়ে কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিন হাজার ১৩৪ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট তিন লাখ ৮৪ হাজার ২৯৯ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিন লাখ ২১ হাজার ৩০১ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬২ হাজার ৯৯৮ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান করা যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআরের হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৯০ হাজার ৫৯৯টি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে এক কোটি ৫২ লাখ ৯৪ হাজার ৩৮ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্ল্যাটফর্ম মুক্তপাঠ অনলাইনে সেবা দেওয়ার জন্য গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্ত হয়েছেন আরো ১৬ জন চিকিৎসক। এ নিয়ে এই বিভাগে বর্তমানে মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৬ হাজার ৪৫৪ জন। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।