
আতিয়ার রহমান, মণিরামপুর (যশোর) থেকে:
মহামারী করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মণিরামপুরের প্রাথমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্ডার গার্টেন স্কুলের তিন শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। গত ৭ মাস উপজেলার প্রায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক শিক্ষক বেকার হয়ে পড়েছেন।
ইতোমধ্যে সরকার করোনায় বিভিন্ন খাতে প্রনোদনার ব্যবস্থা করলেও কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের জন্য বিশেষ কোন ব্যবস্থা না থাকায় চরম দূর্ভোগে রয়েছেন এ সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। অন্যান্য খাতের ন্যায় প্রাথমিক পর্যায়ের বেসরকারি এ সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জন্য সরকার বিশেষ সহায়তার ব্যবস্থা করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন এলাকার শিক্ষক সমাজ।
সূত্রমতে, চলতি বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম মহামারী কোভিড-১৯ সনাক্ত হয়। এরপর সংক্রমন প্রতিরোধে সরকার লকডাউন ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার পাশাপাশি দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন। ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি ও লকডাউন তুলে নিলেও বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও যথারীতি বেতনভাতা পাচ্ছেন সরকারি, বেসরকারি (এমপিও) ভ‚ক্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা। এমনকি মহামারী করোনায় সরকার বিভিন্ন খাতে বিশেষ প্রনোদনার ব্যবস্থা রেখেছেন। যার অংশ হিসেবে শিক্ষা খাতে নন এমপিও শিক্ষকরাও সরকারের এই সুবিধা পেয়েছেন।
কিন্তু দূর্ভাগ্য অত্র এলাকার প্রাথমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের। তাদের জন্য নেই সরকারের বিশেষ কোন ব্যবস্থা। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা থেকে শুরু করে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনভাতার একমাত্র উৎস্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ওপর ধার্যকৃত বেতন।
গত ৭ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে কর্মরত শিক্ষকদের রুটি রোজগার। অথচ মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে কিন্ডার গার্টেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রদান করা হয় বিনামূল্যের পাঠ্যবই। এমনকি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হয় অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বন্ধের মধ্যে বেতনভাতা পেলেও কিন্ডার গার্টেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জন্য নেই কোন বিশেষ ব্যবস্থা।
বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ৪০টি কিন্ডার গার্টেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তিন শতাধিক শিক্ষক মানবেতর জীবন-যাপন করছে। সরদার নওয়াব আলী প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাসির আহম্মেদ শাহীন জানান, গত ৬ মাসেরও বেশি সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী সবাই মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
না পারছি সাধারণ কোন কাজ করতে, না পারছি অন্যকোন পেশা বেছে নিতে। শিক্ষকদের রোজগারের সকল পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা চাই আমাদের জন্য শিক্ষাবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাকালীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা পর্যন্ত বিশেষ সহায়তার ব্যবস্থা করবেন।