
নিজস্ব প্রতিবেদক: ১১ই মে ঐতিহাসিক কুরআন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাতক্ষীরা শহর শাখার আয়োজনে আলোচনা সভা ও অর্থসহ কোরআন বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার ( ১১ মে ) সাতক্ষীরা জেলার মুন্সিপাড়াস্থ অবস্থিত আল আমিন ট্রাস্টের কনফারেন্স রুমে বিকাল ৫ টায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাতক্ষীরা শহর সভাপতি মুহা. আল মামুনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভা ও অর্থসহ কুরআন বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় এইচআরডি সম্পাদক মোঃ আব্দুর রহিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাতক্ষীরা জেলার সাবেক সভাপতি, বর্তমান সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর অফিস সেক্রেটারী মাওঃ রুহুল আমিন। প্রধান অতিথি আব্দুর রহিম বলেন,প্রতিবছর ১১ মে কুরআন দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। ১৯৮৫ সালের ১১ মে কুরআনের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে সংঘটিত হয় এক পৈশাচিক, নারকীয় হত্যাকান্ড। ১৯৮৫ সালের এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের গুলিতে আটজন মানুষ মৃত্যুবরণ করে। দিনটিকে স্মরণে রাখার জন্য সেই থেকে এই দিবস পালিত হয়ে আসছে। ঘটনার সূত্রপাত ভারতে ১৯৮৫ সালের ১২ এপ্রিল। এদিন ভারতের দুইজন উগ্র সাম্প্রদায়িকতাবাদী নাগরিক পদ্মপল চোপরা ও শীতল সিং কোরআনের সকল আরবি কপি ও অনুবাদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে একটি রীট আবেদন করে। কুরআনকে বাজেয়াপ্ত করার মামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে কলকাতাসহ সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। ১০ মে জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে হাজার হাজার ইসলামী ছাত্র-জনতার মিছিল ও সমাবেশে মিলিত হলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সারাদেশের মত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ ময়দানে আয়োজন করা হয় এক প্রতিবাদ সমাবেশ। ১১ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। এদিন ইসলামী জনতা শুধুমাত্র দোয়া করার অনুমতি চাইলে তা না দিয়ে জনতার উপর গুলী বর্ষণ করে পুলিশ। এতে স্কুল ছাত্র, কৃষক, রিক্সাওয়ালা ও রেল শ্রমিকসহ গুলিবিদ্ধ হয়ে ৮ জন শাহাদাত বরণ করেন। এ ঘটনায় শীষ মোহাম্মদ, রশিদুল হক, ৮ম শ্রেণীর ছাত্র সেলিম, সাহাবুদ্দীন, কৃষক আলতাফুর রহমান সবুর, রিক্সা চালক মোক্তার হোসেন ও রেল শ্রমিক নজরুল ইসলাম শহীদ হন। আহত হয় অর্ধ শতাধিক মানুষ। সর্বশেষ ১১ই মে শাহাদাত বরণকারী আট জন সহ সকল শহীদদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত এবং সাধারণ ছাত্রদের মাঝে ফ্রি অর্থসহ কুরআন বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাবেক সভাপতি মাওলানা রুহুল আমিন।