
পারুলিয়া স্বপ্ন বাজার শপিং সেন্টারের প্রোফাইটর ইছা আমিন ও তার ছেলে হাসিব। স্বপ্ন বাজার শপিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হয়েছেন একাধিক কর্মচারী। কয়েকজন ভূক্তভোগীর সাথে কথা বলে তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হলো- বৈচনা গ্রামের মুন্না বলেন, ইছা আমিনের মুখের কথা আর বাস্তব কাজে কোন মিল নেই। আমিসহ এখন পর্যন্ত যারা এই প্রতিষ্ঠান কাজ করেছেন তাদের বেশির ভাগই ব্যক্তি ইছা আমিনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন। আমি স্বপ্নবাজার শপিং সেন্টারের সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলাম। ইছা আমিনের সাথে আমার চুক্তি ছিল মাসে ৮ হাজার টাকা। ওভার টাইম করলে আলাদা ভাবে পারিশ্রমিক দিবে। সে অনুযায়ী আমি স্বপ্ন বাজার শপিং সেন্টারের কাজ শুরু করি। কয়েক দিন পর ইছা আমিন ফোন করে আমাকে বলে তোমার বাড়ি থেকে স্বপ্নবাজার শপিং সেন্টার একটু দূর হয়ে যায় তুমি পারুলিয়ায় একটি মেসে থাকো আমি খরচ দিবো। তখন আমি রাজি হলে পারুলিয়া একটি মেসে আমাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। যেহেতু ইছা আমিন দেশের বাইরে হিসাব-নিকাশ তার ছেলে হাসিব দায়িত্ব পালন করে। মাস পার হয়ে গেলেও বেতন দিতো না দিতো না মেছের ভাড়া মাঝে মাঝে শুধু মাত্র মেসের খাবারের খরচটা দিতো। তাতে আমার চলতো না পরিবার থেকে টাকা এনে আমার খরচ করতে হত। এদিকে গভীর রাত পর্যন্ত শপে কাজ করতে হতো। কাজের শেষে মেছে ফিরে প্রায় দেখতাম খাবার নেই। অনাহারে অনেক কষ্টে রাতগুলো পার হয়েছে। শপিং সেন্টারের বাহিরে ইছা আমিনের বাড়ির কাজও করেছি। ওভার টাইম তো দূরের কথা মাসের বেতনের টাকা ঠিক মতো কখনো দেইনি। এক পর্যয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। অসুস্থ অবস্থায় শপিং সেন্টারে কাজ করছিলাম কাজে অমনোযোগী হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ভিডিওতে তখন ইতালি থেকে ইছা আমিন লাইভ দেখছিলেন। তখন তিনি আমাকে ফোন করে বলে ভালো ভাবে কাজ করতে পারলে কর না পারলে চলে যা। এই কথা বললে আমি চলে আসি। আমার শেষ মাসের বেতনের টাকা চাইলে ইছা আমিন ফোন রিসিভ করেননি। ছেলে হাসিব কে বললে দিতে পারবেনা বলে জানিয়ে দেয়। দেবহাটা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড টাউন শ্রীপুর গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলাম ছেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি একটি ইন্টারনেট কোম্পানিতে কাজ করতাম পারুলিয়া বাজারে আমাদের অফিস। ওনি একদিন বাসায় এসে বললো আমার বাসায় ও শপিং সেন্টারে লাইন নিবো তখন থেকেই মূলত আমি ইছা আমিনকে চিনি। কিছু দিন পর আমি চাকরিটা ছেড়ে দেই। একদিন ওনি আমাকে বলেন আপনি তো বেকার আছেন স্বপ্ন বাজার শপিং সেন্টার চালু হলে আপনি জয়েন্ট করেন। আমি কাজ শুরু করে দিলাম, প্রথম মাস থেকেই বেতনের টাকা নিয়ে তালবাহানা শুরু করে। বেতনের টাকা চাইলে ইছা আমিন এক রকম কথা বলে, তার ছেলে আরেক রকম কথা বলে। তিন মাস পর আমি স্বপ্ন বাজার শপিং সেন্টারের কাজটা ছেড়ে দেই বর্তমান আমি আগের চাকরিটা করছি। স্বপ্নবাজার শপিং সেন্টারের ইন্ট্রো ডিজাইনের কাজ করেছিলেন সাতক্ষীরার একটি ছেলে তার ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ১০/১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই স্বপ্ন বাজার শপিং সেন্টার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছে ইছা আমিন ও তার ছেলে হাসিব। সখিপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আয়ুব হোসেনের ছেলে ইসরাইল বলেন, আমি কয়েক মাস স্বপ্ন বাজার শপিং সেন্টারের সেলস ম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলাম। ঠিকমত বেতন পরিশোধ না করায় আমিসহ আরও দুই জন কর্মচারী সেখান থেকে কাজ ছেড়ে চলে যায়। বেতনের টাকা ইছা আমিন ও তার ছেলে হাসিব বেশকিছু তালবাহানা করার পর বলে দিতে পারবে না। সব থেকে বড় সমস্যা হল ইছা আমিন ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব পাওনাদার এসে শপিং সেন্টারের ঝামেলা করে। দোকানের ১ বছরের ভাড়া পরিশোধ করে না। মার্কেট মালিক দোকানে এসে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ইছা আমিনের এসব কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে একাধিক কর্মচারী কাজ ছেড়ে চলে গেছে।