
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) : আশাশুনির রামনগরে দেড় শতাধিক বছরের ভোগদখলীয় জমির মৎস্য ঘেরের বাঁধ কেটে তছনছ, মাছ লুট ও নেটদারা ঘেরা দিয়ে পথ বন্দ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখলকারীদের হুমকীতে অসহায় পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে আইন অমান্যের উৎসবে মাতলেও প্রশাসনের জোরালো পদক্ষেপ না থাকায় পরিবারের সদস্যরা চোখে শর্ষে ফুল দেখছে।
দরগাহপুর ইউনিয়নের রামনগর মৌজায় এসএ ২১০ নং খতিয়ানে ৬৬৭ দাগে ২.২৮ একর জমির মধ্যে অনিল কুমার বিশ্বাস দিং নামে বিআরএস রেকর্ড হয় ৪১৯৯ দাগে ৩০ শতক। বাকী জমি খাস হওয়ার পর ২.০০ একর অবমুক্ত ঘোষণা করা হয়। যার মধ্যে অনিল দিং এর ২ বিঘা। এসব জমি তারা বংশ পরম্পরায় প্রায় দেড় শত বছর ভোগ দখল করে আসছে। অনিল কুমার বিশ্বাস ও অনেকে অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষ মৃত নুরুল আমিন গাজীর ছেলে আনোয়ার ষড়যন্ত্র করে গোপনে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার সাথে যোগসাজস করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদের পক্ষে প্রতিবেদন নেয়। এবং অনিল দিংকে কোন প্রকার নোটিশ বা না জানিয়ে তাদের নামে রেকর্ডীয় জমি মিউটেশন করিয়ে নেয়। নং ৭০১৪/২৪-২৫। জানতে পেরে অনিল দিং ১৮/৫/২৫ তারিখে ৭০১৪/২৪-২৫ নাম পত্তন কেসটি সম্পূর্ণ বাতিল করার আবেদন করেন। মিস কেস নং ১৮৩/২৪-২৫ (ধারা ১৫০)। আবেদন পেয়ে উপজেলা ভূমি অফিস ২০/৫/২৫ তাং উভয় পক্ষকে নোটিশ করেন। ধার্য তাং ২৪/৬/২৫। একই সাথে তারা অতিঃ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সাতক্ষীরায় পি-৯২৩/২৫ (আশাঃ) ১৪৫ ধারা মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশাশুনি ও ওসি আশাশুনি থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ করেন। কাগজ পত্রে বৈধতা না থাকা এবং আদালতের নির্দেশ অমান্য করে প্রতিপক্ষ আনোয়ারের নেতৃত্বে ২৭ মে সকালে ২০০/২৫০ ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মৎস্য ঘেরের বাঁধ কেটে তছনছ করে, ঘেরের মাছ ধরে নেয় এবং ২৯ মে ওয়াপদার সাইট দিয়ে নেটের ঘেরা দিয়ে পথ বন্ধ করে দেয়। তাদের হুংকার ও হুমকী ধামকীতে অনিল দিং এর পরিবারের সদস্যরা প্রাণ ভয়ে বাড়িতে পালিয়ে থাকে। এব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হালকা ধমক দিলেও প্রতিরোধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। পরিবারের সদস্যরা নেটের বেড়ার কারনে গোসলও করতে পারছেনা। তাদের লাগানো ঘেরের মাছ প্রতিদিন দখলকারীরা মেরে নিচ্ছে। অনিল কুমার জানান, আনোয়ারের পিতা নুরুল আমিন জীবিত থাকা অবস্থায় ২৭/১০/৯৯ তাং তাদের সাথে আপোষ মীমাংসা পত্রে স্বাক্ষর করে মীমাংসা করে নিয়ে স্ব স্ব জমিতে দখল করে আসছিলেন। কিন্তু এখন আনোয়ার পিতার মীমাংসা মানছেনা, আইন আদালতও মানছেনা। অসহায় অনিল দিং পরিবারের সদস্যরা দেশের গৌরব সেনা বাহিনী, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।