আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর: শ্যামনগরে অর্ধ কোটি টাকায় পাতানো নিয়োগ পরিক্ষা, অভিযোগ স্থানীয়দের। সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা (বিজি) কলেজে প্রায় ৪০ লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে পাতানো নিয়োগের প্রস্তুতি চলছে। একই এলাকার চাঞ্চল্যকর পোড়াকাটলা দীপায়ন স্কুলের পাতানো নিয়োগের পর সদ্য এমপিও হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিজি কলেজের সভাপতি অরুন বিশ্বাস এবং ভারপ্রাপ্ত (অধ্যক্ষ) তপন কুমার মন্ডল পাতানো নিয়োগ সম্পন্ন করতে যাচ্ছেন বলে সত্যতা পাওয়া গেছে। কলেজের সর্বশেষ সরকারী নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী ১৭ আগস্ট ২০২৩ তারিখে “দৈনিক ইনকিলাব” পত্রিকায় সৃষ্ট পদে ”আইসিটি ল্যাব এ্যাসিস্ট্যান্ট” শূন্য পদে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রোজ বৃহস্পতিবার রাত্র ১০ টা থেকে কলেজের প্রভাষক মাসুম বিল্লাহ নিজেই সকল চাকুরী প্রার্থীদের প্রবেশপত্র বিতরণ করেন। এবং ১ দিনের ব্যাবধানে ২১ সেপ্টেম্বর, শনিবার সকাল ১০ ঘটিকায় শ্যামনগর সরকারী মহসীন ডিগ্রি কলেজের অফিস কক্ষে এই পাতানো নিয়োগ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করেছে। যেটা আইন সম্মত নয়, বিধি অনুযায়ী ডাকযোগে ১ সপ্তাহের আগে প্রবেশ পত্র পাঠানোর নিয়ম, কিন্তু সেটা করা হয়নি। সভাপতি অরুন বিশ্বাসের নিজের ছেলে সৌরভ বিশ্বাস জনসনকে আইসিটি ল্যাব সহকারী পোস্টে নেয়ার জন্য অত্র এলাকার ফজলুর রহমান পিত মৃত গওহর আলীকে রেজুলেশন করে গোপনে নিয়োগ কমিটির সভাপতি মনোনীত করা হয় এবং এই নিয়োগের ডিজি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সংশ্লিষ্ট সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ। সেইসূত্রে শ্যামনগর সরকারী মহসীন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ডিজি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা যায়। ১৫ দিনের মধ্যে আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন করার জন্য বলা হলে সর্বশেষ আবেদন জমা দেয়ার তারিখ শেষ হয় ৩১ আগস্ট। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পূর্বে রাতারাতি নিয়োগ বাণিজ্যের চুক্তির টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেন এবং প্রতিটি পদের বিপরীতে ৩ জন করে নিজেদের কোরাম প্রার্থী আবেদন করিয়েছেন সভাপতি নিজেই। ল্যাব সহকারী সৃষ্ট পদে সভাপতি অরুন বিশ্বাসের নিজের ছেলে সৌরভ বিশ্বাস ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি, করেন, বর্তমানে তিনি শ্যামনগর রিডা হাসপাতালের একজন ডাক্তার হিসেবে কর্মরত আছেন। অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী শূন্য পদে ভামিয়া গ্রামের সুকুমার আউলিয়ার পুত্র উজ্জ্বল আউলিয়াকে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি করেন। আয়া পদে শ্যামনগর মহসীন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আসাদুজ্জামান আসাদের শালী রুবিনা খানমকে ১২ লাখ টাকায় চুক্তি করেন। প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ লাখ টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে রাতারাতি নিয়োগ সম্পন্ন করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে অত্র কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। ল্যাব সহকারী শূন্য পদে সভাপতি তড়িঘড়ি করে খুব শীঘ্রই নিয়োগ বোর্ড গঠন করে শ্যামনগর মহসীন ডিগ্রি কলেজে পরীক্ষার স্থান নির্ধারণ করে নিজেদের পছন্দ মত ডিজি কলেজ প্রতিনিধি মনোনয়ন করিয়ে দেন শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ তেজারত ও কন্ট্রোলকৃত জনপ্রতিনিধির সহায়তায় এই পাতানো নিয়োগ বাণিজ্য সম্পন্ন করতে যাচ্ছে সদ্য এমপিও হওয়া বিজি কলেজ। পূর্বের থেকে চুক্তিকৃত ডিজি প্রতিনিধি এবং সভাপতির সহায়তায় রাতারাতি প্রশ্নপত্র ফাঁস করে নিয়োগ বোর্ডের পাতানো নিয়োগ সম্পন্ন করার দিন ২১ অক্টোবর। আসন্ন দূর্গা পূজার ছুটি উপেক্ষা করে বোর্ডের চোখে ধুলা দিয়ে পাতানো নিয়োগ পরিক্ষা হতে চলছে। অত্র এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও চাকুরী প্রত্যাশীদের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। এ ভাবে নিয়োগ হতে থাকলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বারবার হেনস্তা ও নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগ করে অনেক চাকুরী প্রার্থীরা এই নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য সংবাদমাধ্যম, মিডিয়ার প্রতিদৃষ্টি আকর্ষণ করে সরকারের সর্বোচ্চ প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা যায় অত্র এলাকায় প্রায়ই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি চক্রের মাধ্যমে দূর্ণীতি ও স্বজনপ্রীতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সকল ক্ষেত্রে কোটিকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করে থাকে। আলোচিত কৈখালী এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দীপায়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পরানপুর এ-রউফ মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, নৈকাটী দাখিল মাদ্রাসা, ধুমঘাট বি,এস,ডি,এম মোহাম্মদিয়া দাখিল মাদ্রাসা এমপিও ভূক্ত মাদ্রাসার মধ্যে শ্রীফলকাটী দাখিল মাদ্রাসা, ভৌরবনগর দাখিল মাদ্রাসা, ফয়সালাবাদ মুস্তাফাবীয়া আলিম মাদ্রাসা, পাখিমারা আমিনিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা, বিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্য ও পাতানো নিয়োগ নিয়ে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আদালতে কয়েকটি মামলা, শিক্ষকের আত্মাহত্যাসহ এলাকা ভিত্তিক শত্রুতার সৃষ্টি দেখা গেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ তেজারত সহ অত্র প্রতিষ্ঠানের কোন ব্যক্তির দেখা বা মোবাইলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে শিক্ষা অফিসারকে পাওয়া যায়নি এবং মোবাইলও রিসিভ করেননি। ঠিক অত্র প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি এবং মোবাইল রিসিভ করেননি।
অর্ধ কোটি টাকায় পাতানো নিয়োগ পরিক্ষার অভিযোগ নিয়োগ যেন এখন মেধা নই, টাকার বিনিময়ে
পূর্ববর্তী পোস্ট