
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) ঃ আশাশুনির বড়দল ইউনিয়নের ১৫২ নং গোয়ালডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে তদন্ত কর্মকর্তা তালা উপজেলা শিক্ষা অফিসার গাজী সাইফুল ইসলাম অভিযোগের তদন্তে আসেন।
বিদ্যালয়ে গিয়ে এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসে বসে দু’দফা তদন্ত পরিচালনা করা হয়। স্থানীয় বাদশা ইমরান বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলে ঠিকভাবে না যাওয়া, নতুন ভবন নির্মানের অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের থেকে প্রশ্ন ফিস আদায়সহ ১৭টি অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কর্মকর্তা স্থানীয় শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে স্কুলে গিয়ে সরেজমিন জানাশোনা করেন। পরে উভয় পক্ষকে নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে বসে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এসময় বাদী, বিবাদী ও স্বাক্ষীদের থেকে লিখিত ও মৌখিক স্বাক্ষ্য গ্রহন করেন। তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা গাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে, বিধি মোতাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করা হবে।
তদন্ত শেষে স্কুল প্রাঙ্গনে উপস্থিত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে সাংবাদিকরা কথা বললে অভিভাবক মনিরা খাতুন জানান, গ্রামের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন স্যারকে বদলী করাতে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। স্যারের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা বলে তিনি দাবী করেন। অভিভাবক আরা পারভিন বলেন, তার ছেলে ২য় শ্রেণিতে পড়ে। কোন দিন তার থেকে প্রশ্ন ফি নেয়া হয়নি। স্কুলটিতে প্রধান শিক্ষকের এমন অবস্থান যে, স্কুলটি আনারুলের গোয়ালঘর নামে অনেকে ঠাট্টার ছলে বলে থাকে। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি প্রধান শিক্ষকের প্রচেষ্টায় নতুন ভবন বরাদ্দ পেয়েছে। ভবন নির্মান কাজ প্রায় ৫০% সম্পন্ন হয়েছে। আর এখন একটি পক্ষ হেড মাস্টারকে তাড়াতে ষড়যন্ত্র করছে। কোন কোন অভিভাবক বলেন, ঐ পক্ষ তাদের পরিবারের একজনকে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ দানের তদবীরে নামেন, কিন্তু হেড স্যার তার হাতে নেই বলায় তারা আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে। অভিভাবক রওশনারা খাতুন বলেন, তার সন্তান ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ে। তাদের বাড়িতে কন্ট্রাক্টরের লোকেরা ভাড়া থাকে। সিমেন্টও এখানে থাকে। হেড স্যার সিমেন্ট নিম্নমানের হওয়ায় ব্যবহারে বাধা দিলে তারা সিমেন্ট ফেরৎ পাঠিযেছে। হেড স্যার প্রশ্ন ফি নেয়নি, কোন টাকা মেরে খায়নি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা। অপর অভিভাবক আসমা খাতুন, হেড স্যার কোন খারাপ ব্যবহার করেননি, প্রশ্ন ফি নেননি। বৃদ্ধা নূর জাহান বলেন, আনারুল ছোট বয়সে স্কুলে মাস্টার হয়ে এসেছে। তার সম্পর্কে আমি সব জানি। তার মত ভাল মানুষ কমই পাওয়া যায়। মোবারক আলী জানান, স্যার কোন সমস্যা করেননা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আঃ রকিব বলেন, জমিজমা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিষ্ঠানে সমস্যা করা হচ্ছে। তদন্তকালে অভিযোগকারীরা অভিযোগের পক্ষে যুক্তিসংগত প্রমান দিতে পারেনি।