
নিজস্ব প্রতিবেদক: সময়ের ব্যস্ততায় যখন চিকিৎসা অনেকের কাছে শুধুই একটি পেশা, তখন ডা. মোঃ শফিকুল ইসলাম এই পেশাকে পরিণত করেছেন এক মহান সেবায়। রোগীকে ভালোবেসে, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, গরীব-দুঃখীদের মুখে হাসি ফোটানোই যেন তাঁর মূল উদ্দেশ্য। এজন্যই তাঁকে এলাকাবাসী ভালোবেসে ডাকে—“গরীবের ডাক্তার” নামে।
তিনি একজন অভিজ্ঞ মেডিসিন চিকিৎসক, এবং বর্তমানে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে তিনি ছিলেন কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (RMO)—যেখানে তার নিরলস সেবা ও রোগীর প্রতি আন্তরিক আচরণ বহু মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।
সরকারি দায়িত্বের বাইরে জনগণের পাশে—কলারোয়ায় নিরবচ্ছিন্ন সেবা
সরকারি চাকরির বাইরে নিজ উদ্যোগে সেবা দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। প্রতি মঙ্গলবার (বাদে) বিকাল ৪টা থেকে এবং শুক্রবারে সারাদিন, তিনি কলারোয়া শেফা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারে রোগী দেখছেন মাত্রাতিরিক্ত কম ফিতে বা একেবারেই বিনামূল্যে।
রোগীদের অনেকেই জানান,
“ডা. শফিকুল ইসলাম আমাদের জন্য আশীর্বাদ। টাকা না থাকলে তিনি কখনো ফেরান না, উল্টো নিজের পকেট থেকে ওষুধের ব্যবস্থাও করে দেন।”
মেডিসিন চিকিৎসায় পারদর্শিতা, মানুষের জন্য ভালোবাসা—এই দুইয়ের সমন্বয়
ডা. শফিকুল ইসলাম একজন অভিজ্ঞ মেডিসিন চিকিৎসক, যাঁর কাছে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, আছে মানুষকে মন থেকে বোঝার ক্ষমতা। রোগী শুধু রোগ নয়, একজন মানুষ—এই বিশ্বাসে কাজ করেন তিনি।
উপজেলার স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন,
“তিনি এমন একজন অফিসার, যিনি চুপিচুপি গরীব রোগীদের হাতে ওষুধ তুলে দেন, যেন সেটা কখনো প্রচারণা না হয়।”
দেবহাটা উপজেলায় স্বাস্থ্যসচেতনতা ও পরিবার পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান
বর্তমানে তিনি দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে এসেছে নতুন গতি। নারীদের স্বাস্থ্যসেবা, গর্ভবতী মা ও নবজাতকের যত্ন, সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন—সবকিছুতেই সক্রিয় উপস্থিতি তাঁর।
একজন স্বাস্থ্য সহকারী জানান,
“স্যার অফিসের বাইরে গিয়ে কাজ করতে কুণ্ঠাবোধ করেন না, উল্টো বলেন—জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যেতেই হবে।”
“সেবা হল ইবাদত” — এই বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত এক ডাক্তার
ডা. শফিকুল ইসলামের নিজের মুখেই শোনা যায়,
“মানুষের দোয়া পাওয়ার মতো সম্পদ আর কিছু নেই। একজন গরীব রোগীর মুখে হাসি দেখলে মনে হয় আমার জীবন সার্থক।”
এই বিশ্বাস থেকেই তিনি দিনের পর দিন অতিরিক্ত সময়, শ্রম এবং হৃদয় ঢেলে দিচ্ছেন মানুষের কল্যাণে। তাঁর এই নিরলস প্রচেষ্টা এলাকার হাজারো মানুষের জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছে।
যদিও তিনি কোনো পদক বা পুরস্কারের আশায় কাজ করেন না, তবে জনগণের ভালোবাসা ও আস্থা তাঁকে আজ এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। কলারোয়া ও দেবহাটার সাধারণ মানুষ আজও তাঁর অপেক্ষায় থাকেন, কারণ জানেন—”ডা. শফিকুল ভাই আসলেই পাশে থাকবেন।”
ডা. মোঃ শফিকুল ইসলাম একজন চিকিৎসক হয়েও একজন সমাজসেবক, একজন আশার আলো। তাঁর জীবনযাত্রা, সেবা ও আদর্শ আজকের তরুণ ডাক্তারদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি প্রমাণ করেছেন, ডাক্তারি শুধু পেশা নয়, বরং একটি মহান মানবিক ব্রত।