
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা সদর ০২ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেলেও সদরের লাবসা ইউনিয়নে বেশ এগিয়ে আছে ঈগল প্রতীক। অন্যদিকে লাঙ্গল প্রতীক ও ট্রাক প্রতীক এই ইউনিয়নে ভোটের মাঠে জায়গা করার চেষ্টা করছে। এ অঞ্চলের সাধারণ ভোটার ও আওয়ামী লীগ তৃণমূল কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা এবারও ভরসা রাখছেন দুইবারের সংসদ সদস্য আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ওপর।
সরেজমিনে ১৩নং লাবসা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে অভিন্ন চিত্র পাওয়া গিয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দানে উন্মুখ হয়ে রয়েছে। বিশেষত বিগত ইউনিয় পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা ভোট উৎসব করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও তারা ভোট উৎসব করবে। লাবসার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে সাধারণ ভোটার ও আওয়ামী লীগ কর্মীরা জানিয়েছে ঈগলে সমর্থনের কথা। লাবসা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮হাজার ১৮৯জন। এর মধ্যে পুরষ ভোটার ১৩৯৩২ জন ও নারী ভোটার ১৪২৫৭ জন। ৯টি ওয়ার্ড সরেজমিন ঘুরে ভোটের মাঠের প্রকৃত চিত্র পাওয়া গেছে।
১নং ওয়ার্ড: বিনেরপোতা এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই অঞ্চলের সাড়ে ১৮শ ভোটের মধ্যে হাজারেরও বেশি ভোট ঈগলেই দিবে। কারণ সম্প্রতি বিনেরপোতায় বেতনা নদী খনন ও বসুন্ধরার খাল কাটতে যেয়ে উচ্ছেদ হুমকির শিকার হয় নদী ও খালের দুই পাড়ে বসবাসকারী প্রায় তিনশতাধিক বাস্তুহীন পরিবার। ঘরহারা এ মানুষগুলোর মাথার ছাদ হয়ে দাড়িয়েছিলেন দুইবারের এমপি রবি। ফলে উচ্ছেদের হাত থেকে রেহাই পায় বাস্তুহীন গরীব পরিবারগুলো। তাদের সে বিপদের দিনে পাশে দাড়ানো এমপি রবিকে তাই তারা ভোলেনি। এ ওয়ার্ডের চা বিক্রেতা সোহরাবের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের এ ওয়ার্ডে ঘুরে দাড়ানোর জন্য এমপি রবির অবদান অনেক। খাল খননের সময় অনেক গৃহহীন পরিবার উচ্ছেদের শিকার হয়। কিন্তু তিনি হস্তক্ষেপ করায় ঘর বাড়ি রক্ষা করে খাল খনন করা হয়। তার সাথে যোগ করে এ ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, শুধু খালপাড়ের ঘরহীন মানুষ নয়, বিনেরপোতা মাছ বাজারও উচ্ছেদের চেষ্টা করা হয়। বিনেরপোতা ও আশেপাশে অঞ্চলের ৫শতাধিক মানুষের রুটি রুজির জায়গা এটি। এ এলাকার মানুষের রুটি রুজি সমুন্নত রাখতে এমপি রবি পদক্ষেপ গ্রহন করায় বাজারটি রক্ষা পায়।
ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের তালতলা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তারে ছেলে তহিদুল ইসলাম জানান, জন্ম থেকে আওয়ামী লীগ করছি। তাই দলীয় নেতাকেই সমর্থন দেব এটাই স্বাভাবিক। সরাসরি দলের প্রার্থী থাকলে হয়তো ভিন্ন কথা হতো। কারও কথায় আমরা গলবোনা। এমপি রবিকেই আবারও ভোট দিবো। এ ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন বলেন, যখন চিনতামনা তখন থেকেই এমপি রবির কাজ করি। আর এখন তার বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। তিনি আমাদের দলের নেতা। আমরা তাকেই ভোট দিবো। তালতলা সুভাষ মার্কেটের মালিক সুভাস মন্ডল জানান, আমরা নৌকায় ভোট দেই। এবার নৌকা নাই তাই এমপি রবির ঈগলে ভোট দিবো।
লাবসা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড কৈখালীর বাসিন্দা কাঠ ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান সাতনদীকে বলেন, আমরা ভোট দিতে উন্মুখ। সদরের উন্নয়নে এমপি রবির অনেক অবদান আছে। তাকেই ভোট দিবো। সরকারি বিভিন্ন ভাতাভোগীরা তার কাছে কৃতজ্ঞ।
৮নং ওয়ার্ড মাগুরার আনোয়ার সাতনদীকে জানান, আমরা সাধারণ ভোটাররা বর্তমানের সংসদ সদস্যের ওপর ভরসা রাখছি। কারণ তিনি আমাদের কাছে পরিক্ষীত। অন্যদিকে নতুন সংসদ সদস্য নির্বাচন করলে তিনি কেমন হবেন ও চেয়ারে বসে আমাদের ভুলে যাবেন কিনা সেটাও আমরা বিবেচনা করছি।
৪নং ওয়ার্ড দেবনগরের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন খোকন সাতনদীকে জানান, কিছু মান অভিমান থাকতেই পারে। তার মানে এই না যে আমরা আমাদের দলীয় নেতাকে ছাড়া অন্য কিছুতে ভোট দিব। তার জন্য আগেও কাজ করেছি। এখনও করবো। যতক্ষন আমাদের দলীয় কোন প্রার্থী থাকবে ততক্ষণ অন্য প্রতীকের কাজ আমরা করবো না।
লাবসার ৫নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ কর্মী মাকসুদ জানান, আমরা এ ওয়ার্ডের লোকজন এমপি রবিকেই আবারো নির্বাচিত করবো। কিছু সুবিধাভোগী লোকজন থাকবেই। তারা অন্যপ্রতীকের কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক।
লাবসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য এ্যাড শেখ হুমায়ুন কবীর সাতনদীকে জানান, এমপি রবির কোন বিকল্প নাই। আমরা তার কর্মী। তিনি নির্বাচনে স্বতন্ত্র দাড়িয়েছেন। নৌকা ও আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থী নাই। তাই তিনি জয়ী হন বা না হন আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো।
লাবসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড শাহনেওয়াজ সাতনদীকে জানান, আপনারা জানেন এবার নৌকার প্রার্থী নাই। তাই জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকেই আমাদের কর্মী সমর্থকরা ভোট দিবে। সদরে ওনার বিকল্প কেউ নেই। আশা করি লাবসার ৯টি কেন্দ্রেই এমপি রবি এগিয়ে থাকবে।