
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার অজোপাড়া গায়ে অবস্থিত সৈয়দ দীদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সুনাম ও সু-খ্যাতির মাধ্যমে আলো ছড়াচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। সাতক্ষীরা জেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার পূর্বে সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ৬০ শতক জমির উপর তৎকালীন সময়ের বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মৃত্যু খোদা বখ্ত সরদার অত্র বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টি সুশিক্ষা ও ভাল ফলাফল অর্জনের কারণে উপজেলায় একটি স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে প্রায় ৩ যুগেরও বেশি সময় ধরে সাফল্য অর্জনের মাধ্যমে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন এ বিস্তৃত এলাকায়। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্নস্থানে সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন। অতীতের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে বিদ্যালয়টি আজও সাফল্যের স্বাক্ষর ধরে রেখেছে। বিশেষ করে প্রতিবছর এসএসসি ও জেএসসিতে প্রায় শতভাগসহ খেলাধুলাও সাফল্য রয়েছে। এ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ঋতু বর্তমানে খুলনা মেডিকেলে অধ্যায়নরত আছে। এছাড়াও অসংখ্য শিক্ষার্থী সরকারি বেসরকারি দফতরে দায়িত্ব পালন করছেন। সরেজমিনে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের ১৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রচেষ্টায় সুনাম ও সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে প্রায় ৩০০ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টিতে সভাপতি হিসেবে সেবা করছেন তালা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুরশিদা পারভীন পাপড়ী। এছাড়া (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এসএম মিজানুর রহমান।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও আ.লীগ নেতা মো. গফুর বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান নিয়ে নিজেদের খুবই ভাগ্যবান মনে করছি। বিদ্যালয়টি শিক্ষা-দীক্ষায় ও খেলাধুলায় উপজেলার মধ্যে অন্যতম শীর্ষ স্থানে রয়েছে। বিদ্যালয়টি আমাদের এলাকার ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা চাই। বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক এসএম মিজানুর রহমান বলেন, আমি ১৯৮৫ সালে অত্র বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। তখন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৫০ জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ছিল মাত্র ৫ জন। ছিল না বিদ্যালয়ের নামে কোনো নিজস্ব জমি। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর গ্রামের সকলের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমির ব্যবস্থা করি। এরপর বিদ্যালয়ের নামে জরিপ সংক্রান্ত কর্মকান্ডের মধ্যদিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। বিদ্যালয়ের সীমানায় বাউন্ডারি ওয়াল, গেইট, বিদ্যালয়ের সামনে বিশাল মাঠ, একাডেমিক ভবনে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্লাস রুম, অফিস রুম, শিক্ষক মিলনায়তন রুম, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, শেখ রাসেল কম্পিউটার ল্যাব রুম, বিজ্ঞানাগার, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ও মুক্তিযোদ্ধা কর্নার রুম, ছাত্রী এবং শিক্ষকদের জন্য পৃথক পৃথক ওয়াশরুম, আর্সেনিকমুক্ত পানির ব্যবস্থাসহ অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে জনবল নিয়োগে সরকারী নির্দেশনা মেনে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলেও একটি স্বার্থনেসী মহল তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য অত্র বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে কোন প্রকার অর্থনৈতিক লেনদেন করা হয়নি। বিদ্যালয়ের সভাপতি মুরশিদা পারভীন পাঁপড়ী বলেন, তৎকালীন এমন এক সময়ে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে সময়ে এলাকায় শিক্ষার কোন পরিবেশ ছিল না। যারা বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে এই এলাকায় শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছেন আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা অর্জন করে দেশ বিদেশে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে এলাকার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই।