শেখ এনামুল বাসার টিটো, ডুমুরিয়া: ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরের বিতর্কিত হালিমা মেমোরিয়াল নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা এবং ক্লিনিক মালিক মো. কামাল হোসেনকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় হালিমা মেমোরিয়াল নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার, ডুমুরিয়া থানার পুলিশ ও আনসার অভিযানে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের কাছে ক্লিনিক মালিক মোঃ কালাল হোসেন ক্লিনিকের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যার্থ হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করেন এবং ক্লিনিকে কোন ডাক্তার, নার্স, আয়া না থাকায় সিলগালা করে বন্ধ করে দেন। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বৈধ কাগজ পত্র আনলে সেটা যাচাই বাচাই করার পরে আবারও তিনি ক্লিনিক খোলার অনুমতি দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই বিতর্কিত হালিমা ক্লিনিকে ভুল অপারেশনে এক স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর দৈনিক সাতনদী পত্রিকাসহ বিভিন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় মৃত পরিবারের সাথে মোটা অংকের টাকা চুক্তির বিনিময়ে ম্যানেজ করে নেয়। মৃত ফতেমা খাতুন (১১) বাদুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রীছিল। গত ৩১ জুলাই সকালে বাড়িতে ফতেমার পেটে ব্যাথা দেখা দিলে চুকনগর হালিমা মেমোরিয়াল নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসেন। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ফাতেমার পরীক্ষা নিরিক্ষা করে অ্যাপেনডিসাইডস হয়েছে বলে জানান এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপারেশন করানোর পরামর্শ দেন। ওই দিন রুগী ভর্তি করে সন্ধ্যায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ফাতেমা খাতুনের অ্যাপেনডিসাইডস অপারেশনের জন্য অস্ত্রোপচার করেন। এসময় বিতর্কিত হাতুড়ে ডাক্তার কামাল নিজে ডাক্তার সেজে অস্ত্রোপচারের সময় ভুলবশত মূত্রথলির নাড়ি কেটে ফেলায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এঘটনার ৪ দিন পর গত (৪ আগস্ট) শুক্রবার সকালে ক্লিনিক মালিক কামাল হোসেন ফাতেমা খাতুনকে আবারও ওটি রুমে নিয়ে অপারেশন করেন এবং ঘন্টা দুয়েক পরে ওটি থেকে বের হয়ে রোগীর স্বজনদের কাছে ফাতেমা খাতুন গুরুতর অসুস্থ বলে অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফাতেমার অবস্থার অবন্নতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফাতেমাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। এ সময় পরিবারের স্বজনরা দিশেহারা হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে তারা দ্রুত খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফাতেমাকে ভর্তি করেন এবং রুগীর অবস্থা আরও অবন্নতি হলে তাকে দ্রুত আইসিইউতে ভর্তি করেন। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্হায় ফাতেমার মৃত্যু হয়। জানাযায়, হালিমা ক্লিনিকের মালিক মো. কামাল হোসেন ডিএমএফ ঢাকা, গাজীপুর থেকে এ্যাসিসট্যান্ট মেডিকেল অফিসার নাম ধারী হয়ে নিজেই সকল ধরণের অস্ত্রপচার করে আসছে বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।