আব্দুর রহমান: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায় ছূফী ফজলুল করিম ওয়াকফ স্টেট ইসি নং ১১৪৭৫ এর সম্পত্তি দখলের পায়তারার অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ নাসির উদ্দীন ১৭ মে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগ সূত্রে এবং মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ নাসির উদ্দীন জানান, উক্ত জমি আদৌ ব্যক্তি মালিকানাধীন নয়, বরং অবিভক্ত বাংলার প্রখ্যাত আলেম আল্লামা রুহুল আমিন (র.) সাহেব (বশিরহাট হুজুর) ডি,এস রেকর্ডীয় মালিকগণের নিকট হতে ১৭ মে ১৯৩৫ সালে ১৬০৬ নং দলিলসহ আরো কয়েকটি দলিলের মাধ্যমে খরিদ করেন এবং পরবর্তীতে সুফী ফজলুল করিমকে মোতওয়াল্লী করে উক্ত জমিসহ আরো কমপক্ষে ২০০ বিঘা জমি বিভিন্ন মাদ্রাসায় দান করেন। দেশভাগের পর সুফী ফজলুল করিম সাহেব ‘সুফী ফজলুল করিম ওয়াকফ স্টেট’ নামে ইসি নং ১১৪৭৫ মূলে মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার নামে ওয়াকফ করেন। বর্তমান সময় পর্যন্ত উক্ত জমিসহ প্রায় ২৫ একর জমি মাহমুদপুর আমিনিয়া মাদ্রাসা ভোগ দখল করে আসছে। উক্ত বিরোধপূর্ণ জমির বিবরণ: মৌজা: নবাতকাটি, জেল,এল: ২৫, সিট নং ১, ডি,এস খতিয়ান ১০৯, এস,এ খতিয়ান নং ৪২৭, হাল খতিয়ান নং ২৬৫, ডি,এস ও এস,এ দাগ ৪৫১, হাল বি,আর,এস ৯১৯, বিলান ২১ শতক জমি। একটি জালিয়াতি চক্রের সহায়তায় নবাতকাটি গ্রামের মৃত ইসমাইল গাজীর ছেলে মোঃ ইসহাক আলী ইসলামকাঠি রেজিস্ট্রি অফিস পুড়ে গেলে ইসলামকাঠির একটি জাল দলিল তৈরি করে। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে উক্ত দলিলের ভিত্তিতে ১৯৫২, ১৯৫৪, ১৯৫৫ ও ১৯৫৬ নং দলিল তৈরি করে। উক্ত দলিল সাতক্ষীরা জজকোর্ট ১১৪নং সিভিল কেসের মামলায় সহকারী জজ সাহেব দলিল সমূহ জালিয়াতিপূর্ণ বলে বাতিল করেন। উক্ত দলিলের ভিত্তিতে ইসহাক আলী ও তার স্ত্রী আমেনার নামে ১১৫৩/৮৮-৮৯ নং মিউটেশন কেসের মাধ্যমে নিজেদের নামে নামপত্তন করে। পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ১২/০৬/২০১২ তারিখে মাদ্রাসার পক্ষ হতে আবেদনের প্রেক্ষিতে উক্ত মিউটেশন বাতিল করে। উক্ত ভূয়া কাগজের উপর ভিত্তি করে গত ২৫ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মোঃ ইসহাক আলী ও তার স্ত্রী আমেনা খাতুন দাতা হয়ে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার কীর্তিপুর গ্রামের দিল আফরোজ বুলবুল, স্বামী: নেছার উদ্দীন আহম্মেদ এর নিকট বিক্রি করে। মাদ্রাসা কর্তপক্ষ এ বিষয়ে জানিতে পারলে ১৪৪/১৪ নং সিভিল মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় দিল আফরোজ বুলবুলসহ ১৮জন বিবাদী। গত ২৬ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে দিল আফরোজ বুলবুলের পক্ষ হতে উক্ত জমি দখলের আস্ফালন করায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ৩ মে ২০২৩ তারিখে আদালতে নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা করিলে আদালত কারণ দর্শানো নোটিশ দিলে বিবাদী পক্ষ সময়ের প্রার্থনা করেন। অপরদিকে, রাতের আঁধারে বিবাদী পক্ষ উক্ত জমিতে বালি ভরাট শুরু করে। জানতে পেরে মাদ্রাসার পক্ষ হতে বাঁধা দিলেও তারা কর্ণপাত করেননি বরং মাদ্রাসার দেওয়া সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলে। সে প্রেক্ষিতে গত ১৬ মে ২০২৩ তারিখে মাদ্রাসার পক্ষ হতে বাঁধা প্রদান করা হয়। তবে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা সঠিক নয়। এব্যাপারে পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।