
স্পোর্টস ডেস্ক:
‘তোরা কইসস এটা ছয়, এটা ছয়’-সাকিব আল হাসান বলেই যাচ্ছেন। কিন্তু কোনভাবেই মানছেন না লিটন দাশ। এক প্রকার জোর করেই সাকিবকে ফিরিয়ে আনা হলো ব্যাটিং থেকে। হাল ছেড়ে দিয়ে সাকিবও ফিরে আসেন।
এটি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বুধবার (৮ মার্চ) বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের একটি মুহুর্ত। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে জহুর আহমেদের সেন্টার উইকেটে তখন রেঞ্জ হিটিং করছিলেন সাকিবরা।
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়কসহ এখানে ছিলেন লিটন, শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, আফিফ হোসেন ও রনি তালুকদার। শেষ দিকে নেটে ব্যাটিং সেশন সেরে এসে যোগ দেন শামীম পাটোয়ারি। একজন থ্রোয়ার নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে বল ছুড়ছিলেন স্বল্প গতিতে, আর সাকিব-লিটনরা অনুশীলন করছিলেন ছয়ের।
মারের জায়গা আগেই ঠিক করা ছিল, লং অন এবং লং অফ। সবার জন্য বরাদ্ধ এক বল করে। ছয় হলে পাওয়া যাবে দ্বিতীয় সুযোগ। এই ছয় হওয়া নিয়েই সাকিব সতীর্থদের সঙ্গে মধুর তক্কাতক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। সবই ছিল নিছক মজা।
দুই প্রান্ত থেকে চলে রেঞ্জ হিটিং। এক প্রান্তে প্রায় আধঘন্টা ধরে চলার পর সাকিব আরেক প্রান্তে নিয়ে যান সবাইকে। এ সময় লং অফে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর সঙ্গে আলাপরত কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে ‘হাথু ভাই’ ‘এই কোচ’ বলে ডেকে সরানোর চেষ্টা করছিলেন সাকিব। পরে টিম বয়ের মাধ্যমে হাথুরুসিংহেকে সরান।
সেখানে সাকিবই প্রথম হিটিং শুরু করেন। প্রথম বলেই মারলেন লং অফে। বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়ানো বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড। সাকিব এটিকেও ছয় বলে মানার জন্য সতীর্থদের বোঝাচ্ছিলেন নানাভাবে। কিন্তু লিটন-শান্তরা নারাজ।
রেঞ্জ হিটিংয়ের এই অনুশীলনে লং অনে কয়েকটি ছয় হাঁকিয়েছিলেন সাকিব। কিছু বল গেছে বাউন্ডারি লাইনে। একটি বল হিট করতে না পেরে গালিতে ঠেলে দেন। বেশ কিছু ছয় হাঁকিয়েছেন তৌহিদ হৃদয়-রনি তালুকদার। দুজনের শটে জোরও ছিল।
নাজমুল হোসেন শান্ত শুরুতে কয়েকটি ছয় হাঁকালেও পরে যেন আর পারছিলেন না। সবচেয়ে বেশি জড়তা ছিল আফিফ হোসেনের মধ্যে। বেশ কিছু বল মিস করেছেন। সোজা ব্যাটে মাটি গড়ানো শট খেলেছেন। একটি বল ডিফেন্স করেন। একটি টপ এজ হয়। এ সময় সাকিব বলেন, ‘কিরে এটা কই গেছে’ শেষ দিকে একটি ছয় হাঁকান।
আফিফের মতো না হলেও জড়তা দেখা যায় লিটনের মধ্যে। ঠিকঠাক টাইমিং হচ্ছিল না। বেশ কয়েকবার চেষ্টার পর একটি ছয় হাঁকাতে পেরেছেন তিনি। ওয়ানডে সিরিজে ভালো যায়নি, প্রথম ম্যাচে ৭ রানের পর টানা দুই ম্যাচে শূন্য। আফিফও ভুগছেন ফর্মহীনতায়। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যখন দলের হাল ধরার কথা ফিরছেন আউট হয়ে। অনুশীলনে দুজনের জড়তা নিশ্চিতভাবে ভাবাবে টিম ম্যানেজম্যান্টকে। আর নেট সেশন শেষে শামীম এসে একটি বল খেলেন, এটি ছয় হয়।
সবকিছু মিলিয়ে জহুর আহমেদে এই রেঞ্জ হিটিং সেশন ছিল উৎসবমুখর। সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন সাকিব। কিছু না কিছু বলে হাসি-ঠাট্টায় মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি। আবার ছয় হওয়া না হওয়া নিয়ে সাকিবই বেশি খুনসুঁটি করেন।
সাদা বলে ওয়ানডে সংস্করণে বাংলাদেশ যতটা ভালো টি-টোয়েন্টিতে তার উল্টো। এবার টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে পরীক্ষা। চট্টগ্রামে ওয়ানডে সিরিজের শেষটা সুন্দর হয়েছে, এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে দারুণ শুরুর পালা। আগামীকাল ৩টায় ইংলিশদের মুখোমুখি হওয়ার আগে এমন চনমনে বাংলাদেশই তো প্রয়োজন।