
আহাদুর রহমান জনি, ঝাউডাঙ্গা থেকে ফিরে:
প্রথমে বখাটেপনা। তারপর মাদক সেবন শুরু। এরপর সাথী সঙ্গী সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে চাহিদাও বাড়তে থাকে। এভাবেই মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পরে স্বজল।
সরজমিনে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা গ্রামের বিধু ঘোষের ছেলে স্বজল। সজলরা তিনভাই ও একবোন। বোনটি পরলোকে। বাকি দুই ভাই সুনামের সাথে ব্যবসা করলেও সজল বরাবরই ডানপিঠে। কৈশর থেকেই ইভটিজিং হলো তার নেশা। এরপর বন্ধু বান্ধবের সাথে ইয়ারকি আড্ডার ছলে জড়িয়ে পরে মাদকের সাথে। একটা সময় এসে মাদকসেবন ও মাদকসেবী বন্ধু বান্ধব বাড়তে থাকলো। ফলে সে নিজেই অল্প অল্প করে মাদক বিক্রি করতে শুরু করে। ভারত থেকে চোরাই পথে বিভিন্ন ব্রান্ডের মদ, ফেনসিডিল, গাঁজা ইত্যাদি ধরনের মাদক আমদানি করে। মদ বা ফেনসিডিল বাড়ি নিয়ে বোতল পাল্টে বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয়র বোতলে করে বিক্রি করতো। সব সময় তার কাছে এ ধরনের (লিকুইড) মাদক পাওয়া যেত। তবে কাস্টমার সবই পরিচিত। অপরিচিত কোন কাস্টমারের কাছে মাদক বিক্রি করতো না সে। খুবই সাবধানে মাদক বিক্রি করতো। তাই প্রায়ই মাদক বিরোধী অভিযানে হাত ফসকে বেরিয়ে যেত। সম্প্রতি পৌষ মেলায় প্রকাশে পকেটে করে ফেনসিডিল বিক্রি করার কথাও জানিয়েছে কেউ কেউ। ইতোপূর্বেও কয়েকবার আটকের কথা শুনা গেলেও তাকে বহাল তবিয়তেই দেখতে পাওয়া গিয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের সান্নিধ্যে তার ওঠাবসা। তাদের আশ্রয়েই করে এ ধরনের অপকর্ম। যার কারণে প্রতিবারই নাকি হাত ফসকে যায়। তাকে আটকের পর সেসব নেতারা দৌড়ঝাপও কম করেনি। তবে এবার বিধিবাম অবশেষে চৌকস পুলিশের খাচায় বন্দি হতে হলো।
ঘোষপাড়ার বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার জন্য পুরো ঘোষপাড়ার কিশোরদের বাবা-মাদের টেনশনে থাকতে হয়। বেশ কয়েকটি কিশোর ইতোমধ্যেই স্বজলের খপ্পরে পরেছে। তবে স্বজলের আটকের খবরে তারা খুশি। বৃহস্পতিবার রাতে পাড়ায় গোপনে মিষ্টি বিতরনও হয়েছে। স্বচ্ছন্দ্যে আছেন নিপীড়িত অভিভাবকরা। তাদের কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানায়, আগে প্রতিদিন সদানন্দের চায়ের দোকানে বসে উঠতি বয়সীদের সাথে নিয়ে রাস্তায় যাওয়া বিভিন্ন মেয়েকে উত্যক্ত করতো। তবে এখন তার সাথে যোগ হয়েছে মাদকের সাপ্লাই। গাঁজা ও ফেনসিডিল বিক্রিই ও সেবনই তার মূল পেশা। তবে স্বজলের সহসাই জামিন হতে পারে ভেবে শিউরে উঠছে উঠতি বয়সীদের অভিভাবকরা।
উল্লেখ্য, বৃহষ্পতিবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকে সাতক্ষীরার বাইপাস সড়ক থেকে কাশেমপুর থেকে ২৩ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার হয়েছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা গ্রামের মাদক ব্যবসায়ি স্বজল ঘোষ। পুলিশের দাবি তাকে আসার পথে গ্রেপ্তার করা হয়।