হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ থেকে: জাতীয় পার্টির নেতা চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীনের নির্দেশে তার বোন সামিয়া পারভীন ও ইউপি সদস্য জোবেদ আলীর নেতৃত্বে ২০/২৫ টি মোটরসাইকেলে চড়ে ৫০/৬০ জনের একটি সশস্ত্র দল হাতে রামদা, রড, লাঠি নিয়ে সন্ত্রাসী ও ফিল্মি স্টাইলে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর সহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর ও পদদলিত করে দলীয় সাইনবোর্ড নামাইয়া চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কালিকাপুর খেয়াঘাট সংলগ্ন কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে। ঘটনার খবর জানতে পেরে রাত ১২টার সময় থানার উপ পরিদর্শক আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে গেলেও কোন সন্ত্রাসীকে সেখানে পায়নি বলে সাংবাদিকদের জানান। উক্ত ঘটনায় কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আলী বাদী হয়ে গত বুধবার দুপুরে ২৫ জনকে আসামি করে থানায় ১টি এজাহার দায়ের করেছে।
বুধবার সকাল ৯ টার সময় সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের জানায়, কালিকাপুর খেয়া ঘাটের পাশে বিগত ১০ বছর যাবত কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ১ নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয় টি অবস্থিত। হঠাৎ করে গত মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সাফিয়া পারভীনের হুকুমে তার বোন সামিয়া পারভীন, ইউপি সদস্য জোবেদ আলী নেতৃত্বে রফিকুল, আমিনুর, শাহীন, রেজাউল বিশ্বাস রুহুল কুদ্দুস, আব্দুল হামিদ, সাইফুল, সিরাজুল ইসলাম, শফিকুল, আতাউর, নজরুল সহ ২০/২৫ টি মোটরসাইকেল যোগে প্রায় ৫০ /৬০ জন সন্ত্রাসী হাতে রামদা লোহার রড বাসের লাঠি নিয়ে ওয়ার্ড কার্যালয় এ হামলা চালায়।
এ সময় তারা বাইরের দলীয় সাইনবোর্ড তুলে ফেলে দিয়ে দরজার তালা ভেঙে অফিসের ভিতরে প্রবেশ করে। ভিতরে রক্ষিত টেবিল-চেয়ার বেঞ্চ ভাঙচুর সহ দেয়ালে টানানো জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি টেনে ছিড়ে পদদলিত করে। ওই সময় তাদের সন্ত্রাসী তান্ডবে আশেপাশের ব্যবসায়ী, দোকানদার এবং বসবাসকারীরা ভয়ে দ্রæত পালিয়ে যায়। তারা লুটপাট শেষ করে বাহিরে এসে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টা দিয়ে উল্লাস করতে করতে চলে যায়। এঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীনের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার বাবা প্রয়াত চেয়ারম্যান কে মোশারফ হোসেনের আমল থেকে এই অফিসটি ব্যবহার করে আসছিল। তার ধারাবাহিকতায় সেও এই কার্যালয় টি তার অফিস বলে ব্যবহার করে আসছে। তবে সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুর ও বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের ঘটনা অস্বীকার করেন। সশস্ত্র মোটরসাইকেল বহরের সন্ত্রাসী কর্মকাÐের বিষয়ে কোনো সদুত্তর মেলেনি।
এ বিষয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা কবিরুজ্জামান মন্টু এবং সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আলীর নিকট জানতে চাইলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, গতকাল সন্ধ্যার পরে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীর ৫০/ ৬০জনের পেটুয়া বাহিনী মোটরসাইকেল যোগে যেয়ে অফিস ভাঙচুর লুটপাট সহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর ও পদদলিত করে নিজের সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়ে এসেছে বিষয়টি আমরা সাথে সাথে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম সাহেব এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার নরিম আলী মুন্সী এবং সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট কে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ঘটনার আরও সত্যতা জানার জন্য থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোটর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান বিষয়টি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ডা: আ ফ,ম রুহুল হক সাহেবকে এবং সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার কে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
কালিগঞ্জে আওয়ামী লীগ অফিসে সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুর, থানায় মামলা দায়ের
পূর্ববর্তী পোস্ট