নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: রুহুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য, কর্মী ছাটাইসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন, যশোর জেলার মনিরামপুর থানার লাউড়ি গ্রামের কে এম জি মোস্তফার পুত্র মেহেদী হাসান।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: রুহুল কুদ্দুস মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে করোনা মহামারীর সময়ে অর্থাৎ গত ১ মার্চ ২০২০ সালে আউটসোর্সিং নিয়োগ প্রাপ্ত ২২ জন জনবলের মধ্যে নিরাপরাধ ৬ জন কর্মীকে কোন কারন ছাড়াই চাকুরী থেকে ছাটাই করেছেন।
অথচ স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপ-সচিব মল্লিকা খাতুন স্বাক্ষরিত গত ৪ আগস্ট ২০২১ তারিখের চিঠিতে উক্ত ২২ জন জনবল বহাল রেখে নতুন ১১ জনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হলেও তিনি সেই আদেশ অমান্য করে কলেজের একজন স্বেচ্ছাচারী ডা: কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড গঠন করে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন।
আরও উল্লেখ থাকে যে, এই বোর্ডের সদস্য ডা: সংকর প্রসাদ বিশ্বাস ও কামরুজ্জামান তাদের পছন্দের লোক নিয়োগ দিয়েছেন। সেটি সম্পূর্ণ অন্যায়। আমরা এই অন্যায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কেননা উক্ত ২২জন সেবাকর্মীর সেবা অর্থ বিভাগ কর্তৃক এক বছর পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। যার অর্থ মন্ত্রণালয় ব্যয় ব্যবস্থাপনা শাখা-৬ অর্থ বিভাগ এর স্মারক নং ৪০৮ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ পারসোনেল-১ শাখা বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকার স্মারক নং ৫৯০০০০০১০৯৫১০০১২০৩৫০।
তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চায় ২০২০ সাল যখন করোনা মহামারীতে সারা পৃথিবী অসহায় হয়ে পড়েছিলো। করোনা নিষ্ঠুরতা বাবা তার সন্তানকে এবং সন্তান তার বাবাকে স্পর্শ করেনি। এমনকি মৃত্যুর পরেও তার দাফন কিংবা জানাজায়ও অংশগ্রহণ করেনি। ঠিক তখনই সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে নিয়োগ প্রাপ্ত আমরা ২২জন সেবাকর্মী লকডাউনের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছি।
অথচ চলতি বছরের গত ২৯ জানুয়ারি তারিখে মেডিকেল কলেজের নোটিশ বোর্ডের ডা: রুহুল কুদ্দুস স্বাক্ষরিত চ‚ড়ান্ত তালিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি উক্ত ২২ জন সেবাকর্মী থেকে আমি ও নুরজাহানসহ ৬জন কর্মীকে বিনা অপরাধে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমাদের ৬ জনের ন্যায্য বেতন থেকে ৪ হাজার ১৩০ টাকা অন্যায়ভাবে কর্তন করতো ঠিকাদার আব্দুর রশিদ। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করাই আমাদেরকে চাকুরী থেকে বাদ দেওয়া হয়। আমরা এহেন জঘন্য অপরাধের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি ।
তিনি আরো বলেন, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজটি আমাদের প্রাণের স্পন্দন। এটি সাতক্ষীরাবাসীর সম্পদ কিন্তু অত্যান্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি আমাদের এই প্রিয় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ডা: রুহুল কুদ্দুস ও ডা: কামরুজ্জামানের মতো দুর্নীতিবাজদের জন্য কলেজটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কেননা নিয়োগের ক্ষেত্রে ডা: রুহুল কুদ্দুস চরম স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়েছেন তিনি চলতি বছরের গত ২৬ জানুয়ারি একটি নিয়োগে স্বাক্ষর করেছেন ঠিক তার ৩ দিন পর গত ২৯ জানুয়ারি উক্ত নিয়োগ বাতিল করে আরেকটি নিয়োগে স্বাক্ষর করেন যেটি সম্পূর্ণ অন্যায়।
অধ্যক্ষ ডা: রুহুল কুদ্দুস উক্ত নিয়োগে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য করে যে নিয়োগটি দিয়েছেন সেটি সম্পন্ন করতে গিয়ে ঠিকাদার আব্দুর রশিদের নিকট থেকে পূবালী ব্যাংক খালিশপুর শাখা একাউন্ট নং ০০০ ০০০ ০০০০১০৬ থেকে তিনটি চেকের মাধ্যমে মোট ১০লক্ষ টাকা গ্রহণ করেছেন। যার একটি চেকের নং-০ঝঅ-৩০১৯৯৯৩। আমরা ৬ জন চাকুরী হারিয়ে বর্তমানে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছি এবং আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় তাদের চাকুরীতে পূর্নবহাল করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনার পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: রুহুল কুদ্দুসের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ বিষয়ে কথা বলতে হলে অফিসে আসতে হবে। আগামীকাল অফিসে আসেন যা জানতে চান জানানো হবে।