
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরা-৩ আসনের এমপি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হকের ৭৯ তম জন্মদিন পালিত হয়েছে।
১১ ফেব্রæয়ারি রাত ১২টা ১ মিনিটে নলতাস্থ নিজস্ব বাসভবনে পরিবার, নিকট আত্মীয় ও দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে কেক কেটে ৭৯ তম জন্মদিন পালন করা হয়।
এসময় কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক ছোট, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শম্ভু চরণ মন্ডল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম আশিকুর রহমান আশিকসহ জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা থানা অফিসার ইনচার্জবৃন্দ, কালিগঞ্জ, দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সহ শুভাকাঙ্খীরা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতায় ১৯৪৪ সালের ১১ ফেব্রæয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নজির আহমদ ও মাতার নাম আছিয়া খাতুন। তার শৈশব কেটেছে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এর প‚ণ্যভ‚মি নলতাতে।
তিনি নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৯ সালে এসএসসি এবং ১৯৬১ সালে ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৬৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন।
পরবর্তীতে লন্ডন, আমেরিকা ও বাংলাদেশ থেকে এফআরসিএস, এফআইসিএস এবং এফসিপিএস ডিগ্রী অর্জন করে মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। ডাক্তার হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশসহ দেশের বাইরে।
পরবর্তীতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী হিসেবে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে তিনি এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ১৯৭০ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ঢাকা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে আবাসিক সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতার শিকার শত শত মানুষকে এসময় তিনি চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত লন্ডনের ‘এসএইও অ্যান্ড রেজিস্ট্রার ইন অর্থোপেডিক্স অক্সফোর্ড’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকার পঙ্গু ও পুনর্বাসন হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে অর্থোপেডিক্সের বিভাগীয় প্রধান এবং সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পঙ্গু ও পুনর্বাসন হাসপাতালের পরিচালক ও অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থোপেডিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এবং পরবর্তীতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে কনস্যালট্যান্ট (অর্থোপেডিক্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক রাজনৈতিক জীবনে সর্বপ্রথম ১৯৬৭ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করে এমপি নির্বাচিত হন।
২০০৯ সাল থেকে তিনি সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প‚র্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান এবং ২০০৩ থেকে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন ও আওয়ামী লীগের সাতক্ষীরা জেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি একাধারে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামÐলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সভাপতিও। ২০০৪ সালের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আহত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের চিকিৎসায় তার অনবদ্য অবদানের জন্য তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে তিনি স্বাস্থ্যখাতে অভাবনীয় উন্নয়নে অবদান রাখায় দেশ ও দেশের বাইরে থেকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি স্বর্ণপদক, জাতিসংঘ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অ্যাওয়ার্ড, শিশুদের টিকাদান কর্মস‚চির সাফল্যের জন্য গ্যাভি বোর্ড’র পুরষ্কারসহ অসংখ্য পদক ও পুরষ্কার পেয়েছেন।
নিজ নির্বাচনী এলাকায় শক্ত হাতে নৌকার হাল ধরে এগিয়ে নিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগকে। স্বপ্নের মেডিকেল কলেজ গড়ে তুলে আধুনিক রূপে রূপ দিয়েছেন সাতক্ষীরাকে। জেলার স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, এতিমখানা, পাঠাগারসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও সংস্কার করে সাতক্ষীরাকে করেছেন আলোকিত।
শিক্ষা-সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে তিনি হাট-বাজার, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংস্কার করেছেন। অবহেলিত সাতক্ষীরাকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সচেষ্ট আছেন। উন্নত সাতক্ষীরা বিনির্মাণে তার অবদান অপরিসীম।
অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক তার জন্মদিনে সাতক্ষীরাসহ সমগ্র দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।