
নিজস্ব প্রতিবেদক: কলেজ ছাত্র সাজিদ হত্যা চেষ্টা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী কিশোর গ্যাং লিডার আল হেলাল জয় সাতনদী সম্পাদক হাবিবুর রহমানকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় মুনজিতপুরের নিজ বাসভবনের সম্মুখেই প্রকাশ্যে কোপা প্রদর্শন করে হাবিবুর রহমানকে কোপানোর হুমকি দেয়। এঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও জিডি সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় আপন বড়চাচী আরিনা খাতুনকে আচমকা মারপিট শুরু করে আল হেলাল জয়। এ সময় প্রতিবাদ করে চাচাতো চাচা আমিনুর রহমান ও মমিনুর রহমান। আল হেলাল জয় প্রতিবাদ করতে আসা আমিনুর রহমান ও মমিনুর রহমানকেও মারধোর শুরু করে। জয় ইট এবং লোহার রড তুলে আমিনুর ও মমিনুরকে মারতে উদ্যত হয়। এসময় সম্পাদক হাবিবুর রহমান জয়কে নিবৃত করার চেষ্ট করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জয় বলে তুই পূর্বেও আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেছিস বলে বাড়ি থেকে কোপা নিয়ে আসে। এসময় তার আপন চাচা জাহাঙ্গীর হোসেন খোকনও জয়ের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে সম্পাদক হাবিবুর রহমানকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। উপস্থিত লোকজন জয়কে টেনে হিচড়ে বাড়ির মধ্যে নিয়ে যায়। এসময় হাবিবুর রহমান মোবাইল ফোনে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম কবীরকে বিষয়টি জানান। তিনি হাবিবুর রহমানকে পরামর্শ দেন ডিউটি অফিসারের সাথে কথা বলতে। ডিউটি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করার পৌণে একঘন্টা পর সাদা পোশাকে একজন এএসআই ঘটনাস্থলে আসলেও হাবিবুর রহমানকে তিনি খোঁজ করেননি। পরে পুলিশের উপস্থিতি জানতে পেরে হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হত্যার হুমকি দেয়ার বিষয়টি জানান। এসময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আমি মিটমাট করে দিচ্ছি। তিনি এও বলেন, আমি এখানকার ভাড়াটিয়া। ওই পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই জাহাঙ্গীর হোসেন খোকন হাবিবুর রহমানকে অপমান সূচক কথা বলেন। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা নিরব দর্শক ছিলেন। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি মোবাইল ফোনে ওসি গোলাম কবীরকে জানান সম্পাদক হাবিবুর রহমান এবং তিনি অন্য কোন অফিসারকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ জানান।
এদিকে ঘটনাস্থলে আসা পুলিশ কর্মকর্তা চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আল হেলাল জয় সাতনদীর সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহফুজকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘মাহফুজ ভাই পত্রিকায় নিউজ হলে সম্পাদক হাবিবুর রহমানকে কোপা দিয়ে কোপাব। সে ইতোপূর্বেও আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করেছে।’
এরপর হাবিবুর রহমান থানায় গিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি জিডি এন্ট্রি করেছেন।
উল্লেখ্য, কয়েকমাস আগে শহরের কাটিয়ার ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানের কলেজ পড়–য়া পুত্র শেখ সানজিদ আল সাজিদকে তার বাড়ির সামনেই আল হেলাল জয় ও তার কিশোর গ্যাংয়ের সহযোগীরা কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় মনিরুজ্জামান বাদি হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্তপূর্ব আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে চ‚ড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেছে। মামলাটি এখন আদালতে বিচারাধীন। আল হেলাল জয় নিয়মিত মাদক সেবন করে। তার নিজ বাড়িতেই মাদকের আসর বসায়। তাদের একটি তিনতলা ভবনে সদর থানার একাধিক পুলিশ অফিসার ভাড়াটিয়া হিসাবে আছে। ওইসব পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা থাকায় জয় অনেকটা বে-পরোয়া। প্রতিবেশীরা ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেনা।