
সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনি থেকে: আর কয়েকদিন পর শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। করোনার কারনে এবার স্বাস্থ্য বিধি মেনে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বাঙালী সমাজে সনাতন ধর্মের গন্ডি পেরিয়ে শারদীয় দূর্গোৎসব সার্বজনীনে পরিনত হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর বুধবার মহালয়ার মধ্যদিয়ে দেবী দুর্গার আগমনের বার্তা মর্তলোকে পৌঁছে যাবে। মাতৃবন্ধনা শুরু হবে ১০ অক্টোম্বর অক্টোম্বও রবিবার ২০২১। মহাপঞ্চমী তিথিতে দেবীর বোধনের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসব।এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছে আশাশুনির প্রতিমা শিল্পীরা। পড়েছে প্রতিমা সাজানোর ধুম। প্রতিবারের ন্যায় এবারও আশাশুনিতে ১০৫ টি পূজা মন্ডপে পুজা অনুষ্ঠিত হবে। পরম যতেœ পূজা মন্ডপে প্রতিমা ও মন্ডপ সাজানো হচ্ছে। বিশেষ করে আশাশুনির বুধহাটা কাছারি পাড়া পূজা মন্ডপ,আশাশুনি সদর পুজা মন্ডপ,বুধহাটা সুবর্ণ বনিক পাড়া পূজা মন্ডপ,মহেশ্বর কাটি পূজা মন্দির সহ আশাশুনির ১০৫ টি পূজা মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরি,মন্দির সাজানো সহ অন্য অন্য কাজ । ১১ টি ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় পুজার আমেজে মেতে উঠেছে সনাতন ধর্মালম্বীরা।দোকানী রা সাজিয়েছে নিত্য নতুন কাপড় সহ পোষাক দিয়ে। প্রতিমা তৈরির কারিগরদের বেড়েছে ব্যস্ততা। হাত সময় নেই তাই অনেক কারিগর রাত দিন কাজ করছেন। তাদের দম ফেলার সময় নেই। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম করেও সঠিক পারিশ্রমিক না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করেন প্রতিমা কারিগররা।করোনার কারনে বিগত বছরের চেয়ে এবার প্রতিমা তৈরীর খরচ অনেকাংশে কম। আশাশুনির বেশ কয়েকটি প্রতিমা তৈরীর মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, পূজা আরম্ভের দিন সন্নিকটে হওয়ায় প্রতিমা পূজা মন্ডপে তোলার উপযোগী করে তুলতে দিনরাত কাজ করছেন প্রতিমা শিল্পীররা। বৃষ্টি থাকায় গ্যাসের ছোট চুলার তাপ দিয়ে প্রতিমা শুকানো হচ্ছে।যেসব প্রতিমা শুকানো হয়েছে সেসবে চলছে রং দেওয়ার কাজ।রং দেওয়া শেষ হওয়া প্রতিমাগুলাতে চলবে শাড়ী ও গহনা পড়ানের কাজ।বুধহাটা সুবর্ণ বনিক পাড়া পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরী করছেন অরবিন্দু দাশ। তিনি গত বিশ বছর এ এলাকায় প্রতিমা তৈরী করছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিবারের ন্যায় এবার তিন জন কর্মচারী আট সেট প্রতিমা তৈরী করছি। রোদ কম হওয়া গ্যাসের হ্যান্ড চুলাই প্রতিমা শুকাতে হচ্ছে।পূজার শেষ সময় এসে গেছে। বলতে গেলে রাত দিনই কাজ করছি।কাজ প্রায় শেষ। অধিকাংশ প্রতিমায় রং দেওয়া খুব শিঘ্রই শুরু করবো।মন্দিরের ভিতরে চলছে দেবীর প্রতিমা তৈরীর কাজ।আশাশুনির মহেশ্বরকাটি পূজামন্ডপের শিল্পী রবীন দাস বলেন, ‘ প্রতিমার রং লাগানোর পাশাপাশি কাপড় পড়াতে হবে। বিভিন্ন রংয়ের কাপড় থেকে বেছে নির্দিষ্ট রংয়ের কাপড় পড়িয়ে ট্রায়েল দিতে হবে। কোন কোন প্রতিমায় চার পাঁচ বার করে কাপড় বদলাতে হচ্ছে ।’ আশাশুনি উপজেলার সর্ব বৃহৎ পূজা অনুষ্ঠিত হয় বুধহাটা কাছারি বাড়ি পুজা মন্ডপ ও মহশ্বের কাটি পুজা মন্ডপে, কিন্ত এবার করোনার প্রকোপের কারনে ছোট করা হয়েছে পূজার আযোজন।বুধহাটা কাছারি বাড়ি পূজা মন্ডপের সাধারন সম্পাদক বাপী দেবনাথ বলেন, ‘এবার আমরা করোনা ভাইরাসের কারনে স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্বল্প পরিসরে পূজা করবো।বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আশাশুনি উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক রনজিৎ কুমার বৈদ্য বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে আশাশুনিতে ১০৫ট মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সবগুলো মন্ডপ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারে সেজন্য উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।আমাদেও নিজস্ব মন্দির তদারকি দল থাকবে।