নিজস্ব প্রতিবেদক, শ্যামনগর: জেলে প্রবেশের অনুমতির প্রথম দিনেই বনবিভাগের ষ্টেশন গুলিতেই দালালদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে স্টেশনের অফিস গুলোতে দীর্ঘ দিন পর জেলেদের সুন্দরবনে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে বনবিভাগ। প্রবেশের প্রথম দিনেই ৪ ষ্টেশনে দালালদের আনাগোনা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো।
বনবিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দালালরা ষ্টেশনে প্রবেশ করতে পরবে না। তবে দালালরা বলেছেন আমাদের কাউকে ষ্টেশনে প্রবেশ করতে নিষেধ করেনি কেউ। সরজমিনে দেখা যায়, ষ্টেশন গুলোতে জেলেদের সকল কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে দালালরা। প্রতি ষ্টেশনে দালালদের জন্য রয়েছে কাগজ পত্র রাখার জন্য স্থান।
দালালরা বনবিভাগের পোষ্যপুত্র হিসাবে কাজ করে থাকেন বলে স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ। রীতিমত দালালদের কথা না শুনলে হয়রানির স্বীকার হতে হয় জেলেদের। নাম প্রকাশে কয়েক জন জেলে বলেন,সুন্দরবনের পাশ নিতে হলে দালালদের সাথে যোগাযোগ না করলে আমারা সময় মত পাশ পাব না। বনে প্রবেশ করতে অনেক বেগ পোহাতে হবে। তাই দালালদের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে টাকা একটু বেশি লাগলেও সময় মত সব কাজ মিটে যায়।
জানা যায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি ষ্টেশন গুলোতে দুই ডজনের মতো দালালরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। যার মধ্যে খোদ বুড়িগোয়ালিনী ষ্টেশনে শহিদুল মোল্লা,জালাল মোল্লা,হাসান সরদার, ইসমাইল সানা,আসাদুল, মোকলেছুর। কোবদক ষ্টেশনে লুৎফর, মাসুম। কদমতলা ষ্টেশনে মতিয়ার রহমান,আজিবার,আমজাদ। কৈখালী ষ্টেশনে শহীদুল ইসলাম,মহাসিন গাজী, সালাউদ্দিন এসকল দালালদের কারণে প্রতিনিয়ত হয়রানি হতে হয় জেলেদের।
বনবিভাগের দেওয়া সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলেরা। সুন্দরবনে সরকারি নিষিদ্ধ সময় ও অভয়ারণ্য এলাকায় মাছ, কাঁকড়া বনবিভাগের কাছ থেকে প্রবেশের অনুমতির নামে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। ভ্রমণের জন্য নতুন বি এল সি, পুরাতন বিএলসি নবায়ন, জেলেদের সরকারি নিয়ম ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকে।
সুন্দরবনের অভয়ারণ্য মাছ ধরতে সহায়তা সহ জেলেদের নিরাপদে লোকালয়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করে থাকেন। শুধু তাতেই ক্ষান্ত নয় তারা। সুন্দরবনের টহলরত সকল প্রশাসনিক সহায়তা দেয়ার নামে জেলেদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এমনকি বনবিভাগের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের সাথে দালালদের সখ্যতা আছে বলেও জেলেদের সাথে পরিচয় দিয়ে থাকে। দালাল চক্রটি বনবিভাগের নাম ভাঙিয়ে জেলেদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে গড়ে তুলছে সম্পদের পাহাড়।
বনবিভাগ থেকে দালাল মুক্ত করার বিষয় জানতে চাইলে সাতক্ষীরা রেন্জ কর্মকর্তা এম এ হাসান বলেন,আমি দায়িত্ব আসার পরে সকল ষ্টেশনে দালাল ঢুকতে নিষেধ করে দিয়েছি। যদি কেও বনবিভাগের নাম ভাঙিয়ে জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেয় প্রমান দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া জেলেরা সরাসরি ষ্টেশনে এসে তাদের প্রয়োজনে কাজ করে যাবে।