জিয়াউর রহমান শ্যামনগর থেকে: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো মেরামত খাতে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ১২টি প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলন সহ চার সহকারী শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে কোটি টাকার ঘুষ বানিজ্যের খবর গত ৮ আগস্ট ২০২০ দৈনিক সাতনদী পত্রিকা সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর নড়েচড়ে বসে এবং তাৎক্ষনিক দূর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলনকে ভোলা জেলার লাল মোহন উপজেলায় ষ্ট্যান্ড রিলিজ করেন। বদলীর খবরে ক্ষতি গ্রস্থরা শিক্ষা অফিস ঘেরাও করলে সে দায়িত্ব ভার হস্তান্তর না করেই রাতের আধারে পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে শিক্ষা অধিদপ্তর হতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম গঠন করেন। উক্ত তদন্ত টিম তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আগামী ২৯ ও ৩০ আগস্ট দুই দিনব্যাপী প্রতিদিন সকাল ১১ টা হতে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসে তদন্ত করবেন বলে জানা গেছে। তদন্তে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তির্বগকে যথাসময়ে র্নিধারিত স্থানে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তদন্ত টিমের প্রধান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন) ড. উত্তম কুমার দাস।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ ও ২০২০ অর্থ বছরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো মেরামতে শিক্ষা অধিদপ্তর হতে শ্যামনগরে ১৯১ টি স্কুলে ১২টি প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয় ৪ কোটি ৯১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এসব প্রকল্পের বরাদ্দের চেক ছাড় পেতে শিক্ষকদের নগত ৯০ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪ শত ৫০ টাকা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলনসহ সহকারী শিক্ষা অফিসার শাহআলম,আজহারুল ইসলাম,সোহাগ হোসেন ও সোহাগ আলমকে ঘুষ প্রদান করতে হয়েছে। ঘটনাটি শ্যামনগর উপজেলার সর্বত্র আলোচিত ও সমালোচিত।
এ ছাড়া ২০১৯ অর্থ বছরে ¯িøপ খাতে বরাদ্দ হতে ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন ক্রয় থেকে শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলন হাতিয়ে নেন ২৭ লক্ষ ৪৮ হাজার ২ শত টাকা। অথচ জেডকেটিকো মডেল নং কে ৫০ এ নামীয় ডিজিটাল হাজিরা মেশিনটির বাজার মূল্য ছিল ৬ হাজার ৮ শত টাকা। অথচ শিক্ষা অফিসার মেশিনটির ওয়ারেন্টির অজুহাত দেখিয়ে প্রতিটি মেশিন বাবদ ২৭ হাজার ৫ শত টাকা কর্তন করে বাকী টাকার চেক শিক্ষকদের প্রদান করেন।
এসব দূর্নীতির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান হলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন) ড. উত্তম কুমার দাস। অপর দুই সদস্য হলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (সাধারন প্রশাসন) মোঃ নজরুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকিউরমেন্ট অফিসার (অর্থ রাজস্ব) আ,ফ,ম জাহিদ ইকবাল।
তদন্তে শ্যামনগরে আসার বিষয় মুঠো ফোনে শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলনের সাথে কথা হলে তিনি তদন্তের দিন শ্যামনগরে না এসে সাতক্ষীরাতে অবস্থান করবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান।