
নজরুল ইসলাম, তালা থেকে: উৎপাদন খরচ বেশি হলেও লাভের পরিমাণ বৃদ্ধির কারনে কৃষি নির্ভর সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় বেলে দোআঁশ মাটিতে সাম্প্রতিক উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে মাল্টার চাষ। সকলের মধ্যে একটু ব্যতিক্রম মাল্টা ও বেদানা চাষি,গাছের ফল দেখে বেশ খুশী এই যুবক।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মোঃ আব্দুল আলীম মোড়ল সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইলেকট্রিশিয়ান হিসাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। ২০১৯ সালে বাবার দেওয়া ৩৫ শতক জমিতে ১৭০ টি মাল্টা ও ১৭০ টি বেদানার গাছ দিয়ে শুরু এই ফলের বাগান। মাত্র তিন বছরেই তিনি আজ সফল মাল্টা চাষি। গত বছরে তাঁর বাগানে সামান্য পরিমাণ মাল্টা ফল হয়েছিল। এ বছর অনেক ফল হয়েছে। গত বছর প্রায় বিশ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি হয়। এই বাগানে হওয়া বেদানা গাছে এখনো ফল ধরেনি তবে এবার ফল ধরবে বলে আশাবাদী তিনি। মোঃ আব্দুল আলীম মোড়ল সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার আগোলঝাড়ার গ্রামের মৃত নূর আলী মোড়লের পুত্র তিনি বিদেশে থাকা কালীন ও দেশে এসে টেলিভিশনে মাল্টা চাষের ওপর একটি প্রতিবেদন দেখে তিনি এই ফল চাষে আগ্রহী হন । ২০১৯ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে এসে মাল্টার বাগান শুরু করেন। প্রাথমিক ভাবেই ৩৫ শতাংশ জমিতে তাঁর বাগান রয়েছে। সেখানে আছে প্রায় দেড় শতাধিক মাল্টা সহ দেড় শতাধিক বেদানা ফলের গাছ।
প্রবাসী ফেরৎ যুবক মোঃ আব্দুল আলীম মোড়ল জানান, তিনি ৩৫ শতাংশ জমিতে এই ফলের বাগান করেছেন এ পর্যন্ত প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। বাগানে মাল্টার পাশাপাশি বেদানার গাছ আছে এবং তার পাশে বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছ রোপন করেছেন। আরও আছে নারকেল, আমড়া,ও লিচু গাছ । তবে মাল্টা ও বেদনা চাষের ওপর তিনি বিশেষ নজর রাখেন। তাঁর বাগানে থাইল্যান্ডের বেড়িকাটা মাল্টা ও ভারতীয় প্রলিত মাল্টা জাতের গাছ আছে। চারা রোপণের দুই বছরের মধ্যে শুরু হয়। কিন্তু তিন বছর পর একটি গাছে পূর্ণাঙ্গভাবে ফল ধরা শুরু করেছেন বলে তিনি জানান। তিন বছর পরে গাছপ্রতি মৌসুমে ১০ থেকে ২০ টি এমন কি কোন গাছে ৩০-৫০ টি মাল্টা ধরেছে। বর্তমানে তাঁর বাগান পরিচর্যার জন্য সারাক্ষণ পরিচর্যা কর্মী কাজ করেন এবং তিনি যে নিজের কাজ নিজে করতে পছন্দ করেন বলে জানা যায়। তাঁর দেখাদেখি এলাকার অনেক বেকার যুবক স্বল্প পরিসরে মাল্টাবাগান করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া বর্তমানে তালা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় অনেক মাল্টা চাষের বাগান ।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, মাল্টা চাষ অনেক লাভজনক ফসল। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে মাল্টা চাষিদের এন এ টি পি-২ প্রকল্প, জি কে ডি এস পি প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী দেওয়া হয়। এবং পুষ্টি বাগানের প্রকল্পের প্রদর্শনী প্রদান করা হয়েছে। সকল মাল্টা চাষী দের সঙ্গে কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক যোগযোগ রাখেন বলে জানান। এছাড়া সকলকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট প্রদান করা হয়ে থাকে।