
হাফিজুর রহমান / হাবিবুল্লাহ বাহারঃ– গত এক সপ্তাহ ব্যাপী ভ্যাপসা গরমের জের ধরে মঙ্গলবার রাতে প্রবল ভারী বর্ষণে কালিগঞ্জ উপজেলার জুড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে কৃষিজমি, বীজতলা, শাকসবজিসহ প্রায় ৫ শতাধিক মৎস্য ঘের তলিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে।
দুই শতাধিক গরীব অসহায় গরীব মানুষের কাঁচা ঘর ভাড়ি রাতভর ভারি বর্ষণে ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। অনেকে এখন বাড়িঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার রাত ৯টার সময় প্রবল বর্ষণ চলাকালীন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর বিওপির হাড়তদাহ এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ওয়াপদা বেড়িবাঁধের পাশে মুহূর্তের ঘূর্ণিঝড়ে ১৯ টি পরিবারের বাড়িঘর চূর্ণ-বিচূর্ণ লন্ডভন্ড করে দেয়। ওই সময় তাদের কাঁচাপাকা বাড়ীঘর গুলো প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে কুড়িয়ে নিলে রাতভর ভারী বর্ষণে ক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবতার জীবনযাপন করতে দেখা গেছে। খবর পেয়ে বেলা ২টার সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম, উপজেলা পি আই ও মিরাজ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন। এবং তাদের বাসগৃহ নির্মানের ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে প্রবল বর্ষণ চলাকালীন এক ঘণ্টা পর রাত আনুমানিক ৯টার সময় আকস্মিক একটি ঘূর্ণিঝড় এসে মুহূর্তের মধ্যে তাদের বাড়িঘর প্রচণ্ড ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে যায়। ওই সময় তারা জীবন বাঁচাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘরের দেয়াল এবং গাছের ডালপালা ধরে জীবন রক্ষা করে বেঁচে যায়। বর্তমান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে জীবন যাপন করছে। এদিকে মঙ্গলবার রাতভর প্রবল ভারি বর্ষণে উপজেলা সদরসহ ১২টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে শতশত ঘের পানিতে তলিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যেয়ে মালিকরা পথে বসতে চলেছে। পানি নিষ্কাশনের বা ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় উপজেলা সদরের বাজার গ্রাম, বাজার গ্রাম রহিমপুর, সহ আশেপাশের গ্রামগুলো পানিবন্দি হয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন সরকারি খাস খালগুলো প্রভাবশালীদের দখলে থেকে মৎস্য ঘের ছাড়া স্থানীয় তহশীলদারদের ঘুষ বাণিজ্যের কারণে ঐ সমস্ত সরকারি খাস খাল গুলো বেহাত হয়ে এখন প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় এখন খালগুলোর অস্তিত্ব নাই। যে কারণে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় একটু ভারি বর্ষণ হলেই বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে থাকে এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। অনতিবিলম্বে সরকারি খাস খালগুলো উদ্ধারের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে উপজেলাবাসী।