
আশাশুনি প্রতিবেদক: আশাশুনিতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে আশাশুনি সদর, শ্রীউলা, প্রতাপনগর, আনুলিয়া, শোভনালী, বুধহাটা ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা মুহুর্তের মধ্যে লন্ডভন্ড করে দেয়। আম্পানের আঘাতে ওয়াপদার বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে আশাশুনি সদর, শ্রীউলা প্রতাপনগর, আনুলিয়া ইউনিয়ন ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই “ঘূর্ণিঝড় যশ” এর চোখ রাঙ্গানিতে ভয়ার্ত হয়ে পড়েছে আশাশুনির উপকুলবর্তী হাজার হাজার মানুষ। আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নির্মানের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ক্ষতি গ্রস্থ মানুষ এখনো তাদের ভিটায় যেতে পারিনি। সাতক্ষীরা জেলার সব কটি উপজেলায় “ঘূর্ণিঝড় যশ” আঘাতও আনতে পারে বলে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। ফলে আশাশুনি উপজেলার উপকূলবর্তী হাজার হাজার মানুষ উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে বলে জানাগেছে। আশাশুনিতে সম্ভব্য “যশ” আঘাত আনতে পারে সে সকল এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান আবুহেনা সাকিল , ইঞ্জিনিয়র আবম মোছাদ্দেক, শেখ জাকির হোসেন, আলমগীর আলম লিটন ও স,ম সেলিম রেজা মিলন, প্রভাষক ম.মোনায়েম হোসেন বলেন, আমরা এমন একটি উপজেলায় বসবাস করছি যার তিন ধারে নদী ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রবন এলাকা। সামান্য ঝড়, বৃষ্টি আর জ¦লোচ্ছাস দেখা দিলে এসকল ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই “ঘূর্ণিঝড় যশ” এর আভাস পাওয়া গেছে। ইতি মধ্যে উপকুলবর্তি মানুষের জানমাল রক্ষার্থে সিপিপি টিমের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ঝুকিপূর্ন বেড়িবাঁধের এলাকা পাউবো’র কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। ভাঙ্গন এলাকায় গেলে ভুক্তভোগিরা জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ঘরবাড়ি সহায় সম্বল ব্যবসা বানিজ্য কর্ম সংস্থান হারিয়ে পথে বসেছি। সব মানুষ এখনো পর্যন্ত তাদের নিজ ভিটায় ফিরে যেতে পারিনি। কোন রকমে মাতা গোজার ঠাঁই হয়েছে। ভেঙ্গে যাওয়া বেড়ি বাঁধের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এরমধ্যে আবার “ঘূর্ণিঝড় যশ” চোখ রাঙ্গাচ্ছে। আশাশুনি উপজেলার ঝুকিপূর্ন দয়ারঘাট, পুইজালা, হাজরাখালী, কোলা, কলিমাখালী, বিছট ,রুইয়ারবিল , শ্রীপুর, চাকলাতেলিখালী এ সকল স্থানে ঘূর্ণিঝড় আঘাত আনলে বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে পূর্বের ন্যায় বিস্তর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভবনা আশাঙ্কা করা হচ্ছে। ইতি মধ্যে আশাশুনি উপজেলা ডিজিস্টার ম্যানেজন্টে কমিটির (ইউডিএমসি) এক জরুরী সভা (জুম মিটিং) অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঞ্চালনায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঘুর্নিঝড় যশ (ইয়াস) এর সম্ভাব্য আঘাত থেকে জানমালের ক্ষতি রক্ষা ও সকলকে নিরাপদে অবস্থানের বিষয়ে আগাম প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আশাশুনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মোস্তাকিমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা রাখেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খাঁনের সঞ্চালনায় সভায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী, পিআইও সোহাগ খান, ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলন, শেখ জাকির হোসেন, আলমগীর আলম লিটন, ইঞ্জিঃ আ ব ম মোছাদ্দেক, আবু হেনা সাকিল, আব্দুল বাছেত আল হারুন চৌধুরী, আশাশুনি প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জি এম মুজিবুর রহমান, সিপিপি উপজেলা টিম লিডার আঃ জলিলসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান ও অন্য সদস্যবৃন্দ। সভায় বক্তাগণ ঘুর্নিঝড় যশ (ইয়াস) মোকাবেলায় সকল ইউপি চেয়ারম্যান, সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক, জন প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও এনজিওগুলোকে দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করার আহবান জানান হয়। সরকার তথা আবহাওয়া দপ্তর ঘোষিত নির্দেশনা ও প্রশাসনের নির্দেশনা যথাযথ ভাবে অনুসরণের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক কাজ করতে আহবান জানান হয়। এজন্য সকল সাইক্লোন শেল্টার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তৈরি করে রাখা, উপজেলা কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগ রক্ষাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া প্রতাপনগর ইউনিয়নের হরিষখালী, কুড়িকাহুনিয়া, কোলা, রুইয়ারবিল, সুভদ্রাকাটি, শ্রীউলা ইউনিয়ন, আনুলিয়া, খাজরা, আশাশুনি সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে পাউবো’র ঝুুঁকিপূর্ণ বাঁধের দিকে নজর রাখতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।