
সাতনদী অনলাইন ডেস্ক: দিনাজপুরে দশম শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে টানা দুই বছর ধরে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ উঠেছে আনোয়ার হোসেন (৫০) নামে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আওয়ামীলীগ নেতাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলার করার পর ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে নির্যাতিতা পরিবারটি।
আসামি আনোয়ার হোসেন দিনাজপুর সদর উপজেলার ২নং সুন্দরবন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার রামডুবি এলাকার মৃত শাহ মোঃ মমির উদ্দীনের ছেলে। মামলার অন্য দুইজন আসামির মধ্যে আনোয়ার হোসেনের গাড়ি চালক বেলবাড়ী গ্রামের মোঃ মানিক (৪৮) এবং ফুলবন ফাজিল মাদ্রাসার পিয়ন মোঃ হাফেজ (৪৮)।
মামলার এজাহারে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা উল্লেখ করেন, তার মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন থেকে মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার সময় আনোয়ার হোসেন বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। এক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রীটিকে তার প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে প্রাইভেটকার চালক ও মাদ্রাসা পিয়নের সহযোগিতায় ছাত্রীটিকে বিভিন্ন স্থানে তুলে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
এ সময় ছাত্রীটি বাধা দিলে আনোয়ার হোসেন নিজেকে নেতা পরিচয় দিয়ে হুমকি-ধমকি দেয় এবং বিয়ের প্রলোভন দেয়। এরপর বিষয়টি কাউকে জানালে ধারণকৃত ভিডিও চিত্র ভাইরাল করে দিয়ে পরিবারের চরম ক্ষতিসাধনের হুমকি দেয় ওই নেতা।
দুই বছর ধরে এই অবস্থা চলাকালে সর্বশেষ গত ২৫ জানুয়ারি রাতে ছাত্রীটিকে মোবাইল করে হুমকি দিয়ে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের ভিডিও আবারো ধারণ করে। বিষয়টি ছাত্রীর পরিবার জানতে পারলে তার বাবাকেও হুমকি দেয় ওই নেতা।
এ ঘটনায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্রীটির বাবা বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় আনোয়ার হোসেনসহ ৩ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এবং ২০১২ সালের পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
ভিকটিমের বাবা মা অভিযোগ, মামলার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে তারা দিন পার করছেন।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই মোঃ জসিমউদ্দীন জানান, মামলা দায়েরের পরের দিনই ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে এবং বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া, আসামিদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে বলে জানান কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মোজাফ্ফর হোসেন।