
আরিফুল ইসলাম আশা:
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় অবৈধ মাদকের রমরমা ব্যবসা আজও বন্ধ হয়নি। পুলিশের মাদক বিরোধী সাড়াশি অভিযান, মাদক সেবীদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার পরেও কোনো ক্রমেই কমছেনা ভোমরা সীমান্ত ও আসপাশের এলাকায় মাদকের আগ্রাসন। এ এলাকায় মাদক চোরাকারবারিরা পুলিশ বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে ফেনসিডিলসহ সকল প্রকার মাদক বিক্রি ও সরবরাহ করছে সাতক্ষীরা জেলা শহর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভোমরা স্থলবন্দর ও আসপাশের এলাকার বহু মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশ ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদকসহ আটকের পর মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠালেও অনেকে জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও মাদক চোরাকারবারিতে সক্রিয় হয়েছে। অনেকে পুলিশের ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা গুলোর কিছু সদস্যের সাথে সুসম্পর্ক রেখে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে আসছে তারা।
ভোমরা এলাকার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেছে, কানপাড়ার মৃতঃ ফকির গাজীর ছেলে শহিদুল এর পরিবারের সবাই মাদক ব্যবসায়ী। শহিদুল এর মেয়ে হোসনেয়ারা, জামাই আবু সাইদ ওরফে ফেনসিডিল ইসলাম, বোন শহিদা, আর এক বোন শাইদা, শাহিদার জামাই মিন্টু, শাহিদার স্বামী সবুর, ভোমরা ঋষিপাড়া এলাকার মৃত ছব্বত আলীর ছেলে মাসুম বিল্লাহ, ঘোষপাড়ার মিলা ঠাকুর, মনি ঠাকুর, পুতুল, বিজিবির সোর্স ফারুক, ভোমরা লক্ষীদাঁড়ির রসিদ, আক্তারুল, আমিনুর, রবিউল বহুদিন যাবত প্রকাশ্যে ভোমরা স্থলবন্দর ও বন্দরের আসপাশের এলাকায় মাদকের চোরাকারবার চালিয়ে আসছে। তাদের প্রত্যেকের নামে একাধিক মাদকের মামলাও রয়েছে।
এছাড়া প্রকাশ্যে ফেনসিডিল বিক্রি করছে ভোমরা ফুলতলা এলাকার মৃতঃ আহসান সরদারের ছেলে শাহিন। শাহিন নিজেও তার তিনজন সহযোগী মিলন, আসাদুল ও রায়হানকে দিয়ে ফেনসিডিল বিক্রি করায়। তারা প্রতিদিন দু’শোরও বেশি ফেনসিডিল বিক্রি করে আসছে। তাদের প্রত্যেকের নামে একাধিক মাদকের মামলাও রয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে শাহিন বিট পুলিশ, বিজিবি সহ আইনপ্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে আসছে বলে জানা যায়।
এদের মধ্যে শাহিন এর ফেনসিডিলের চালান আসে ভারতীয় পাথরের ট্রাকে। আর মাসুম বিল্লাহ, শহিদুল ও ইসলাম নিজেরাই সীমান্ত পেরিয়ে ভারত থেকে ফেনসিডিল ও ইয়াবার বড়ো বড়ো চালান নিয়ে আসে। এসব মাদক সাতক্ষীরা সহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে কৌশলে সরবরাহ করা ছাড়াও নিজে ও পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে বিক্রি করান তারা।
এছাড়াও মাদকের চোরাকারবার চালিয়ে আসছে মাহমুদপুর গোলপাড়া এলাকার হাসান সরদারের ছেলে ইসরাফিল সরদার, একই এলাকার আনসার এর ছেলে আলম। গয়েশপুরের ফরুক, আলম, মাহমুদপুর নাটাপাড়া এলাকার সাইদুল মাদক মামলায় বহুদিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়েছে।
পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর হামলা, মামলা উপেক্ষা করে এ এলাকায় মাদক চোরাচালান, বিক্রি, সেবন চলে আসছে দিনের পর দিন। ভোমরা এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী। মাদকের চোরাকারবারী করে অগাধ টাকার মালিক বনে গেছে তারা। তারা কাউকে পরোয়া করেনা।
ভোমরা স্থলবন্দর এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ী বসবাসকারী জনসাধারণ সকলে প্রকাশ্যে মাদকের এই চোরাকারবারি রুখতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।