জি, এম, নজরুল ইসলাম,মুন্সীগঞ্জ (শ্যামনগর): শ্যামনগর উপজেলার মালঞ্চ নদী থেকে জেলেরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে গলদা চিংড়ির পোনা ধরছেন। এতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তদারকি না করায় এবং আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়া এভাবে অবাধে মাছের পোনা নিধন চলছে।
মশারি জাল দিয়ে নদীর পানি ছেঁকে গলদা চিংড়ির পোনা ধরা হয়। পোনা ধরার সময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ওঠে। চিংড়ির পোনা বাছাইয়ের সময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ডিম ও পোনা নষ্ট হয়ে যায়।
পোনা ধরার সাথে জড়িতদের সূত্রে জানা গেছে, মালঞ্চ নদীর১০০ কিলোমিটার এলাকা গলদা চিংড়ি পোনার বিচরণক্ষেত্র। চৈত্র মাস থেকে এসব এলাকার জেলেরা মশারি জাল, কারেন্ট জাল, ছাঁকনি ও চাদর দিয়ে পোনা ধরা শুরু করেন। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়, শ্রাবণ মাস পর্যন্ত চলবে পোনা শিকার। জেলেরা এসব পোনা স্থানীয় আড়তদারদের কাছে বিক্রি করেন। আড়তদাররা খুলনা, সাতক্ষীরায় গিয়ে বিক্রি করেন।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে উপকূলীয় এলাকা থেকে বাগদা চিংড়ির পোনা আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার জেলে পোনা ধরছে।
জেলেরা বলেন, গলদা চিংড়ি ধরার সময় বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য পোনা-ডিম মশারি জালে উঠে আসে। পরে তারা গলদা চিংড়ির পোনাগুলো বেছে রেখে অন্যগুলো নদী বা ওপরে ফেলে দেন।
মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের জেলে মগ্লা ও মোহাম্মদ মহসিন বলেন, একজন জেলে প্রতিদিন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার পোনা ধরতে পারেন। প্রতিটি পোনা তারা আড়তদারের কাছে দেড়-দুই টাকা দরে বিক্রি করেন। আড়তদার চিংড়ি ঘের-মালিকদের কাছে প্রতিটি পোনা আড়াই-তিন টাকা দরে বিক্রি করেন।
হরিনগর বাজারের পোনার ব্যবসায়ী হুমায়ুন গাজী বলেন, গলদা চিংড়ির পোনা ধরা যে অবৈধ, তা আমরাও জানি। এ ব্যবসায় আমাদের লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এর সাথে আমাদের এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। তাই তারা পোনা না ধরে থাকতে পারেন না।