
- জেলায় মোট ১৭০০ আশ্রয় কেন্দ্রসহ প্রস্তুত
- বেড়েছে গতি-শক্তি
আরও গতি ও শক্তির সঞ্চার করে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকা থেকে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান।
ইতিমধ্যেই, অতি প্রবল শক্তিশালী তথা এক্সট্রিম সিভিয়ার সাইক্লোন থেকে সুপার সাইক্লোনে উন্নীত হয়েছে এটি। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২২৩ কিলোমিটার। যা বিকেল পর্যন্ত ছিল ২১০ কিলোমিটারেরও কম। এ ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের এখন যে বেগ তা সিডরের চেয়েও বেশি। ফলে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
এদিকে, শক্তির সঞ্চার করে গতি বাড়িয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি। এটি এখন প্রায় ২২ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। যে গতি বিকেল পর্যন্ত ছিল ১৪ কিলোমিটারের চেয়ে একটু বেশি।
গতকাল সন্ধ্যার পর আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অরগানাইজেশনের (ডবিøওএমও) ওয়েবসাইটে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
ওয়েবসাইটের তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যদি বাংলাদেশের উপকূল থেকে আনুমানিক এক হাজার কিলোমিটার দূরেও এটির অবস্থান হয়। তাহলে ২২ কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হলেও আরও প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পরে অর্থাৎ বুধবার (২০ মে) বিকেলের এটি উপকূলে আঘাত হানতে পারে। যদি না এটির গতি আরও বাড়ে-কমে।
সংস্থাটি বলছে, আরেকটু সামনে আগালেই এ ঘূর্ণিঝড়ের ঘণ্টায় বাতাসে বেগ আরও বাড়তে পারে।
যদিও উপকূলের দিকে আসতে আসতে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি ও গতি ক্রমশই কমতে থাকে। ইতোপূর্বে আঘাত হানা দুই ঘূর্ণিঝড় ফণী ও বুলবুলের অভিজ্ঞতাও একই কথা বলে। তবে এই দুই ঘূর্ণিঝড়ের কোনোটিই সুপার সাইক্লোন ছিল না।
এদিকে সোমবার (১৮ মে) সন্ধ্যা ৬টার তথ্য বিশ্লেষণ করে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, কেন্দ্রের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে সুপার ঘূর্ণিঝড় আকারে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকাল/সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ¥ীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে ঝড়ো হাওয়া থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য বোরো ধান ৮০ শতাংশ পরিপক্ব হলে তা দ্রæত কাটার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ভয়াবহ এ ঘূর্ণিঝড়টি দু-একদিনের মধ্যেই আঘাত হানতে পারে, এমন সম্ভাবনা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, কোনো ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের বেশি হলে সেটাকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়ে থাকে।
ঘ‚র্ণিঝড় আমফান মোকাবেলায় প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন
এদিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের সাথে দুর্যোগের প্রস্তুতি বিষয়ে জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সাতক্ষীরা-২ নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা-১ নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মোস্তফা লুৎফুল¬াহ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব মনসুর আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ নজরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, নির্বাহী প্রকৌশলী, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক, সিপিপি, খুলনা এর উপ-পরিচালক, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, ডিআরআরও এবং সংশি¬ষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তা/ প্রতিনিধিগণ সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ জুমের মাধ্যমে সভায় অংশ গ্রহণ করেন। তারা সভায় স্ব স্ব বিভাগীয় প‚র্বপ্রস্তুতি তুলে ধরেন ও মতামত ব্যক্ত করেন।
সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ:
শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, কৈখালী, রমজাননগর ও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের; আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের এবং কালিগঞ্জ উপজেলার ঝুকিঁপ‚র্ণ ইউনিয়নের সকল লোকজনকে গবাদী পশুসহ নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী একজন লোককেও অনিরাপদ অবস্থায় রাখা যাবেনা।
জেলায় মোট ১৪৫টি বন্যা / ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রসহ ১৭০০ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল এবং কলেজ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে। চাবি সংশি¬ষ্ট প্রধান শিক্ষকের নিকট সংরক্ষন করা হয়েছে। নৈশ প্রহরীকে সার্বক্ষর্ণিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানসহ মোবাইল সচল রাখতে হবে। জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাগণ আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সংশি¬ষ্টদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ ঐ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ করবেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, সাতক্ষীরা এর অফিস কক্ষে জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। (কালেক্টরেট ভবন, কক্ষ নম্বর ২২৪, টেলিফোন নম্বর ০৪৭১-৬৩২৮১)। উপজেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলতে হবে এবং উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণপ‚র্বক সভার কার্যবিবরণী জেলা প্রশাসকসহ সংশি¬ষ্ট সকলের বরাবর প্রেরণ করতে হবে।
প্রত্যেক আশ্রয় কেন্দ্রে একজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রয়োজন অনুসারে মিড ওয়াইফারী নিয়োগের বিষয়ে সিভিল সার্জন উপ-পরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ এর সাথে সমন্বয় করে জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
গাবুরা, পদ্মপুকুর, প্রতাপনগরসহ ঝুকিঁপ‚র্ণ বেড়ীবাঁধ মেরামতে জরুরি কাজ চলমান রয়েছে। আগামী ০২ দিন ২৪ ঘন্টা কাজ চলমান রাখতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখতে হবে, ঝুকিঁপ‚র্ণ এলাকায় বিভাগীয় জনবলের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে এবং উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে আপদকালীন তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।
সিপিপি-র স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী উপক‚লীয় এলাকায় হ্যান্ড মাইকে প্রচারণা চালানোসহ সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রয়েছে। রেডক্রিসেন্ট এবং এনজিও কর্মীদের সমন্বয়ে প্রচারণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উদ্ধার এবং ত্রাণ কার্যক্রমে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
ইতোমধ্যে ৯৪% ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। কলারোয়া ও সদর উপজেলায় কিছু বাকী আছে। মাইকিং করে ধান কাটা সম্পন্ন করার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আগামী ০২ দিনের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা নিশ্চিত করতে হবে।
গবাদী পশু নিরাপদে স্থানান্তরের সাথে সাথে পশু খাদ্য নিরাপদ সংরক্ষনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান, সিপিপি এর স্বেচ্ছাসেবক এবং মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ঘুর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেত প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
আশ্রয় কেন্দ্রসম‚হে পরিবারের সকল সদস্যকে সামাজিক দ‚রত্ব বজায় রেখে এক স্থানে রাখতে হবে। বৃদ্ধ, শিশু, নারী, প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। তবে সর্দি কাশি ও শ্বাস কষ্টের রোগীদের জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা গ্রহণ করতে হবে।
আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণকারীদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা খাতে প্রদত্ত বরাদ্দ হতে খাদ্য বিতরণ করতে হবে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণের চাহিদার বিপরীতে তাৎক্ষণিকভাবে খাদ্যশস্য সরবরাহ প্রদান করবেন।
সিপিপি ও রেডক্রিসেন্ট এর স্বেচ্ছাসেবক, এনজিও প্রতিনিধি, রোভার স্কাউট এবং বিএনসিসি সমন্বয়ে প্রচার প্রচারণা, উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
আশাশুনি, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর টিম প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও কর্মী বাহিনীসহ উপজেলা পর্যায়ে প্রস্তুত রাখতে হবে। দ্রæত রাস্তা চালু করতে হবে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের গবাদী পশুর নিরাপদ স্থানান্তর নিশ্চিত করতে হবে।
লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তরের হাল নাগাদ তথ্য প্রতি ০১ ঘন্টা অন্তর জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন প্রেরণ করতে হবে।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশের নিজস্ব কর্মী বাহিনীসহ সরঞ্জাম প্রস্তুত রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বিভাগকে পুলিশ বিভাগের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্ট গার্ড, বিজিবি, নৌ পুলিশ ও নৌবাহিনী, সংশি¬ষ্ট জনপ্রতিনিধিগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে মানুষকে নিয়ে আসার জন্য একযোগে কাজ করতে হবে।
প্রয়োজনে ঘ‚র্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে আগত মানুষের জন্য ইফতার ও সেহরীর ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে সাবান ও মাস্ক পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখতে হবে। প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে সিপিপি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউট, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী, সংশি¬ষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান, পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। আশ্রয় গ্রহণকারীদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা সহ সামাজিক দ‚রত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে হবে।
সিপিপি ভলেন্টিয়ারদের মোবাইলে রিচাজ প্রদান করা হলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ঝড় থামার আগে কেউ আশ্রয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করতে পারবে না।
ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শ্যামনগর এবং সহকারী কমিশনার (ভ‚মি), শ্যামনগর উপক‚লীয় দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরায় অবস্থান করে বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী এবং গর্ভবতী নারীদেরকে ঘ‚র্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছেন।
এদিকে গত ১৭ মে রবিবার দুপুর ১২টায় জাতীয় দ‚র্যোগ ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সভাপতি, সিনিয়র সচিব, শাহ কামাল মহোদয়ের সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতিতে ঘ‚র্ণিঝড় “আমফান” মোকাবেলায় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন। এ সভায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়ক জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জেলার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন থেকে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার বিষয়ে বিভিন্ন অসুবিধা ও প্রতিক‚লতার বিষয় তুলে ধরেন। উপক‚লীয় জেলা প্রশাসকগণকে ভিডিওর মাধ্যমে ওই সভায় সম্পৃক্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হল, উপক‚লীয় এলাকার শতভাগ মানুষকে সামাজিক দ‚রত্ব বজায় রেখে তাদের গরু ছাগলসহ নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করতে হবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে ঘ‚র্ণিঝড়টি ভারতের উপক‚ল সহ বাংলাদেশের খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলাসহ নিকটবর্তী জেলাসম‚হে বুধবার ভোর রাতে আঘাত হানার আশংকা রয়েছে। ভারতে আঘাত না হেনে সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানলে আমাদের জন্য একটি বিপদজনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
ঘ‚র্ণিঝড় আমফান মোকাবেলায় উপজেলাওয়ারী প্রস্তুতি:
সাতক্ষীরা জেলায় মোট আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ১২৭২ টি। তন্মদ্ধে, আশাশুনি উপজেলায় ১০৬ টি, দেবহাটা উপজেলায় ১০৪ টি, কলারোয়া উপজলেয়ায় ২১৮ টি, কালিগঞ্জে ১১৬ টি, সাতক্ষীরা সদরে ৩৩৩ টি, শ্যামনগরে ৩০৩ টি ও তালায় ৯২ টি। নতুন আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে কালিগঞ্জে ৮৭ টি। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোর ধারণ ক্ষমতা ৫,২২,০০০ জন। গতকাল বেলা ২ টা পর্যন্ত আশ্রিত লোকসংখ্যা ২৫৬০ জন এবং আশ্রিত গবাদি পশুর সংখ্যা ২০৫০ টি। প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দ‚রত্ব বজায় রেখে অবস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে মাস্ক ও সাবানের ব্যবস্থা আছে এবং আইসোলেসন রুমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন মারফত জানা গেছে।