
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃদু বা হালকা অসুস্থতায় রোগীরা লক্ষণ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে যদি তিনটি ওষুধের অ্যান্টিভাইরাল ককটেল দিয়ে চিকিৎসা করা যায়, তবে তারা দ্রুত সেরে ওঠেন। এমনটাই দাবি হংকংয়ের গবেষকদের।
শুক্রবার (৮ মে) ‘ল্যানসেট’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা করোনা-রোগীদের ক্ষেত্রে এই ককটেল যে একেবারেই কাজ করবে না, এমন কথা বলছেন না বিজ্ঞানীরা। তবে কতটা কাজ করবে, তা জানতে বড় মাপের গবেষণা দরকার বলে মনে করেন তারা।
১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত এই গবেষণাটি চলে। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কোক-ইয়াং ইউয়েন বলেন, সদ্য আক্রান্ত রোগীদের অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের ওই ককটেলটি দেওয়া হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, দ্রুত শরীর থেকে ভাইরাস নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।
মাল্টিপল স্কেলরোসিসের ওষুধ ‘ইন্টারফেরন বিটা-১বি’, এইচআইভি’র ওষুধ ‘লোপিনাভির-রিটোনাভির’ এবং হেপাটাইটিসের ‘রিবাভিরিন’। ককটেলে রয়েছে এই তিনটি ওষুধ। ইউয়েন জানান, এই ককটেল শুধু সদ্য আক্রান্তের চিকিৎসায় কাজ দেবে তাই নয়, স্বাস্থ্যকর্মীদেরও সাহায্য করবে। কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
ওষুধটি নিরাপদ। স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্রমাগত রোগীদের সংস্পর্শে থাকতে হচ্ছে। সংক্রমণের আশঙ্কা তাদের সবচেয়ে বেশি।
এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিষেধকের সন্ধানে গবেষণা চলছে। ব্রিটেন, জার্মানি, চিন ও আমেরিকায় ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু হয়ে গিয়েছে। হংকংয়ের এই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন স্থানীয় ৬টি হাসপাতালের ১২৭ জন রোগী। তাদের প্রত্যেকেই প্রাপ্তবয়স্ক। এর মধ্যে ৮৬ জনকে দু’সপ্তাহ অ্যান্টিভাইরাল ককটেলটি দেওয়া হয়েছিল। বাকি ৪১ জনকে কন্ট্রোল গ্রুপে রেখে শুধু এইচআইভি’র ওষুধ দেওয়া হয়েছিল।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, যাদের ককটেল দেওয়া হয়েছিল, তারা গড়ে ৭ দিনে সুস্থ হয়ে উঠছেন। কন্ট্রোল গ্রুপের রোগীদের সেখানে অনেকটাই বেশি সময় লাগছে সুস্থ হয়ে উঠতে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/