
বিশেষ প্রতিবেদক: শ্যামনগরের রমজাননগরে হুমায়ুন কর্তৃক অর্থের বিনিময়ে জোরপূর্বক ঘর দখলের চেষ্টা, মামলা থেকে বাচঁতে পুলিশের উপর দোষ চাপানো ও ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে যে, ভেটখালী গ্রামের মৃত নৈমদ্দীন কয়ালের পুত্র জহুর আলী কয়াল পৈত্রিক মাত্র দুই শতক জমির উপর একটি ভাঙ্গাচুরা ঘরে বসবাস করে আসছে। দিনমুজুর জহুর আলী পেটের দায়ে প্রতি বছর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যশোরের ইট ভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে থাকে। ৬ মাস ভাটায় কাজ করার পর আবার নিজের বাসস্থলে ফিরে আসে। সেই সুবাদে মাঝে মাঝে তার ভাইপো নওশাদ কয়াল রহিম ঐ ঘরের দেখাশুনা করে থাকে। সম্প্রতি জহুর আলী বাড়ীতে আসলে রহিমের মা এবং স্ত্রী ঘরটি তাদের দাবী করে ঘর ছাড়তে নারাজ হয়। বিষয়টি নিয়ে জহুর আলী নিজ বাদী হয়ে শ্যামনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-১৩(৩)/২০। আর এই মামলার তদন্ত ভার পড়ে এসআই আইনুদ্দিনের উপর। তিনি ০৩/০৪/২০ তারিখে সরেজমিনে ঘটনার তদন্তান্তে আসামী ধরার পদক্ষেপ গ্রহন করেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহাসিন, ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রাক্তন ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন মিস্ত্রী, ৭নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন ইউপি সদস্য রাশিদুল ইসলাম এবং রফিকুল ইসলাম বিষয়টি মিমাংসার জন্য প্রস্তুতিকালে মানিকখালী গ্রামের হোসেনের পুত্র রীট হুমায়ুন রহিমের নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন নাটক সাজিয়ে মামলা থেকে বাঁচতে এখন উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ০৩/০৪/২০ তারিখে প্রকাশ্য গনমাধ্যম ফেইসবুক লাইভে ঐ ১৩নং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার এসআই আইছুদ্দীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকারের নাটক সাজিয়ে মানহানিকর ও ইন্ধনদাতা এবং নেতৃত্বদানকারী হিসেবে তুলে ধওে হুমায়ুন।
হুমায়ুন আরও অভিযোগ তুলে ধরে যে, শ্যামনগর থানার এসআই আইনুদ্দীন সাদা পোশাকে ১৫/১৬ জন গুন্ডা নিয়ে বৃদ্ধা আছিরনকে তার ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘরের মালামাল তছরুপ ও তার পুত্রবধুর শ্লীলতাহানীর মতো ঘটনা ঘটিয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে ও এলাকাবাসীর বরাতে জানা যায়, পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগের কার্যকলাপ দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে স্বার্থ হাসিল করছে মামলাবাজ রীট হুমায়ুন। এর মধ্যে মামলা করার জন্য গত ৩ মে ২০২০ তারিখে হুমায়ুন নাটক সাজিয়ে রহিমের মা আজিরন বিবিকে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।
এ ব্যাপারে এসআই আইনুদ্দীন বলেন, আমি তদন্তের জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চলে আসি কিন্তু হুমায়ুন আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে তা সম্পূর্ন ভিত্তিহীন। কোন পুলিশ এমন ধরনের কার্যক্রম করতে পারে না। আমি বিষয়টির নিন্দা জানাচ্ছি।
তবে স্থানীয় গন্যমান্য যারা শালিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা বলেন, আমরা বিষয়টি মাত্র গুছিয়ে এনেছিলাম কিন্তু হুমায়ুন বিষয়টির ঝামেলা বাঁধিয়ে দিলো।
এলাকাবাসীরা জানান, হুমায়ুন ওরফে রীট হুমায়ুন বর্তমানে কিছু নেতার লেজ ধরে এলাকায় এমন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও চুরি জিআরপি ১৮৯/২০০৫, মারপিট ও চুরি জিআর ৯৫/২০০৬, সংখ্যালঘুদেও জমি দখল ও উচ্ছেদ ২৩/৮৬(২০০৮), ব ন বিভাগের সরকারী গাছ কর্তন মামলা নং ১৫/১২৫(২০০৯),ধর্ষন মামলা নং ০৩/৬৭(২০১০), ছাত্রশিবিরের সরকার বিরোধী গোপন বৈঠক মামলা নং ৩৫/১০৯(২০১০)ও মুক্তিযোদ্ধা হত্যার চেষ্টা, নাশকতা, খুন, ধর্ষণ, সরকারী খাদ্য গুদামের জায়গা দখল সহ বিভিন্ন অভিযোগ ২/৩ ডজন মামলা আছে। এলাকার গরীব অসহায় মানুষের বিরোধে পক্ষ নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে মামলা করে থাকে সে। থানা মিথ্যা মামলা নিতে নারাজ হলে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে নিয়ে আসে রীট। এভাবে সে বহু মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করলে হুমায়ুন তার কোন নিকটতম আত্মীয়কে সাজিয়ে পড়িয়ে সেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ এনে তার ব্যক্তিগত নয়াডাক অনলাইন পত্রিকায় এবং ফেইসবুকে লাইভ সম্প্রচার করে। আর এ জন্য ফেইসবুকে তার সাথে হাতে গোনা ১০/১২জন এক দলীয় (ছাত্রশিবির) বন্ধুরা শেয়ার, কমেন্ট ও বিভিন্ন প্রশাসনের ফেইসবুক আইডিতে ট্যাগ করে সন্মানহানী, হয়রানী সহ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে থাকে।
তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী, এলাকায় গোলযোগ সৃষ্টিকারী, সুবিধাবাদী ও বহু মামলার আসামী রীট হুময়ুনের কবল থেকে পরিত্রান পেতে এলাকাবাসী প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হুমায়ুনের বক্তব্য জানার জন্য তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।