আকবর হোসেন: সরকারী আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সকল নির্দেশনা অমান্য করে করোনার মধ্যে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের শাহজাদপুর গ্রামের মৃত শচীন্দ্রনাথ দাসের ছেলে আশুতোষ দাস চালাচ্ছে এ রমরমা কোচিং বানিজ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আশুতোষ দাশ তার নিজের বাড়ীতে খুলেছেন কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের পড়ানোর কোচিং সেন্টার। নবম ও দশম শ্রেনীর ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে পড়াচ্ছেন তিনি। কোচিং শুরু হয় সকাল ৬.৩০ ঘটিকা হতে। একের পর এক কোচিং চলতে থাকে। করোনা মোকাবেলায় শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক আশুতোষ দাসের মুখে ছিলনা কোন মাস্ক, ছিলনা সামাজিক দুরত্ব। দৈনিক তিন শিফটে ৫০/৬০ জন ছাত্র-ছাত্রীর কোচিং করান তিনি।
নিজের বাড়ী ছাড়াও এলাকায় বিভিন্ন ছাত্র -ছাত্রীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ব্যাচ পড়াচ্ছেন তিনি। করোনার মহামারী হতে রক্ষা পেতে সরকার সকাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও েিকাচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষনা করলেও সেখানে আশুতোষ দাশ নিজের ক্ষমতাবলে চালিয়ে যাচ্ছেন কোচিং বানিজ্য।
২৮ এপ্রিল সকালে তার কোচিং বানিজ্যের ছবি তুলতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে অশোভন আচরন করেন। তিনি বলেন, আমি কোন কিছু ভয় পাইনা। তিনি সরকারের কোন নিয়মনীতি না মেনে বলেন, সরকার কি আমার পেটে ভাত দিয়ে যাবে ? আমি পড়াবো তাতে যে যা পারে করুক।
বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস গোটা বিশ্বকে গিলে ধরেছে আর ঠিক সেই সময় অর্থলোভী শিক্ষক আশুতোষ দাস প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত ছাত্র-ছাত্রীরদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল টাকা। প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে প্রতিটি বিষয়ে প্রতিমাসে নিচ্ছেন ৪০০ থেকে ৫০০শত টাকা।
করোনার প্রাদূর্ভাবে অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিভিন্নভাবে পদক্ষেপ গ্রহনের চেষ্টা করলেও লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে না আশুতোষের। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হুমকির মুখে কোচিং করান এই অসাধু, অর্থলোভী শিক্ষক।
স্থানীয়রা আরও জানায় শিক্ষক আশুতোষ দাস কারো তোয়াক্তা করেন না। ব্যাচে পড়া শিক্ষার্থীরা তাদের ছেলে মেয়েদের সাথে মেলামেশা করে বিধায় তারা তাদের ছেলে মেয়ে নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ অবস্থায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
কোচিংই শেষ নয়, বিভিন্ন বই কোম্পানি সাথে হাত মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয় বাজার থেকে নিন্ম মানের গাইড বই কিনতে। শিক্ষার্থীদের হাতে বিভিন্ন নোট তুলে দিয়ে সীমাবদ্ধ করে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের জ্ঞান।
ইউসুফ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর মানবিক বিভাগের ছাত্রী আনিকা জামানের মা রনি জামান বলেন, করোনর কারনে স্কুল বন্ধ থাকায় এস এস সি পরীক্ষায় ফল খারাপ হবে ভেবে মেয়েকে কোচিং করতে যেতে দেয়া হয়।
তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান জানান, কোচিং না করানোর জন্য প্রতিটি স্কুলে নোটিশ করা হয়েছে। তাছাড়া করোনার জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। সেখানে এমন কোচিং বানিজ্য মোটেই কাম্য নয়। ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদূভাবে সরকার যেখানে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করেছে। এস সময় কোন ধরনের জনসমাগম করা যাবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। তদন্ত করে কোচিং পরিচালনাকারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।