
নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় সাবেক ফিফা রেফারী তৈয়েব হাসানের জার্সিটি ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকায় ক্রয়ে ডাকে সাড়া দিয়েছেন সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি নাছিম ফারুক খান মিঠু। সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান আর্ন্ত জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাবেক ফিফা রেফারী তৈয়েব হাসানের ২০১৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল খেলায় রেফারীর দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তার ব্যবহৃত জার্সিটি স্বেচ্ছায় অনলাইনে নিলামে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন এবং জার্সি বিক্রি থেকে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ তিনি করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্থদের কল্যাণে ব্যয় করার অঙ্গীকার করেন। আজ রবিবার দুপুর ১২.০০টার সময় তিনি নিলামের ঘোষণার ডাকে সাড়া দেন।
চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি নাছিম ফারুক খান মিঠু বলেন, দেশ বর্তমানে একটি কঠিন সংকটময় সময় পার করছে। এমতাবস্থায় দেশের এই ক্রান্তিকালীন মুহুর্তে সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান তৈয়েব হাসান বাবু ভাই এর মহৎ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। তিনি আরও বলেন এই জার্সি ক্রয়ে আমার ইচ্ছাপোষণের প্রধান কারণ উক্ত অর্থ সম্পূর্ণ মানবতার কল্যাণে বিশেষ করে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের কল্যাণে ব্যয় হবে। বর্তমান মুহুর্তে আমাদের সকলেরই উচিত যতটুকু সম্ভব মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তিনি আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই বিখ্যাত জার্সিটির মূল্য আরও অনেক বেশি হবে। তিনি সমাজের সকল বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানান, করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের কল্যাণে এগিয়ে আসার এবং এই নিলামে অংশগ্রহণের। নাছিম ফারুক খান মিঠু বলেন, আমি তুফান কোম্পানী লিঃ এর এমডি তানজীম কালাম তমাল কেও আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই এই ঘোষিত নিলামের প্রথম ডাকে প্রাথমিকভাবে অংশগ্রহণের জন্য।

২০১৩ সালে কাঠমান্ডুতে সাফ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ পরিচালনা করার সময় মাঠে তৈয়ব হাসান (বল হাতে)
এব্যাপারে দেশবরেণ্য রেফারী তৈয়েব হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি নাছিম ফারুক খান মিঠু কে স্বাগত জানাই এই ঘোষিত নিলামে অংশগ্রহণের জন্য এবং তার এই মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসার উদ্যোগকেও আমি আন্তরিকভাবে সাধুবাদ জানাই।
এর আগে জার্সিটি নিলামে বিক্রির ঘোষণা দেয়ার পর কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন সাতক্ষীরার ব্যবসায়ী ডা আবুল কালাম বাবলার ছেলে তুফান কোস্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরুণ ব্যবসায়ী শেখ তানজিম কালাম তমাল।
অপরদিকে, নাছিম ফারুক খান মিঠু ইতোমধ্যে সাতক্ষীরায় করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ব্যাপক ভাবে খাদ্যসামগ্রী বিতরন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। জনশ্রুতি আছে, তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে মানুষের বাড়ি খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। বরাবরের মতই তিনি সামাজিক অবদানে এগিয়ে আসেন এবং মানব কল্যাণে কাজ করেন।
উল্লেখ্য, দেশবরেণ্য রেফারী তৈয়েব হাসানের রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে রয়েছে দীর্ঘ ১৮ বছরের রেকর্ড। তিনি বাংলাদেশের রেফারী হিসেবে সবচেয়ে বেশী আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করেন। দীর্ঘ ১০ বছর তিনি এএফসির এলিট প্যানেলেও ছিলেন। আন্তর্জাতিক রেফারী ছিলেন ১৯৯৬ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত। বিশ্বকাপ বাছাই, অলিম্পিক বাছাই, এশিয়ান গেমস, সাফ গেমস সহ বিভিন্ন ম্যাচ পরিচালনার রেকর্ড রয়েছে তার। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৩ সালে নেপালের কাঠমুন্ডুতে সাফ ফুটবলের ফাইনালে ভারত বনাম আফগানিস্তানের ম্যাচটি এই বিখ্যাত জার্সি পরিধান করে তিনি পরিচালনা করেছিলেন। সাফ ফাইনালের সেরা রেফারী হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য কিছু করতে চাই এবং সমাজের সকল বিত্তবানদের আহবান জানাই এই নিলাম কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য। কেননা তিনি এই সকল অর্থ করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের কল্যাণে ব্যয় করবেন।