
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে বিয়ের ১০ মাস পর প্রতিবন্ধীকে মেয়েকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কালিগঞ্জ উপজেলার গোয়ালপোতা গ্রামের প্রবাসী মোঃ শহিদ হোসেন বৈদ্যের মেয়ে কলেজ ছাত্রী মোছা: খাদিজা খাতুন এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে খাদিজা খাতুন বলেন, আমি একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী ও কাটুনিয়া রাজবাড়ী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আমার পিতা শহিদ হোসেন বিদেশে প্রবাসী। এদিকে আমার চাচা আব্দুর রহিম বৈদ্যের ভায়রা ভাই মেহেন্দিনগর গ্রামের আবু সাঈদ ঋণগ্রস্থ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। এ ঋণের জাল থেকে রক্ষা পেতে আবু সাঈদ যৌতুকের বিনিময় তার ছেলে আল ইমরান হোসেনের সাথে আমাকে বিয়ে দেয়ার জন্য চাচা আব্দুর রহিমের মাধ্যমে প্রস্তাব দেয়। আমার প্রবাসী পিতা প্রতিবন্ধী মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আল ইমরানের সাথে আমাকে বিয়ে দিতে সম্মতি দেন। আমি প্রতিবন্ধি জেনেও আল ইমরানসহ তার পরিবারের সদস্যদের সম্মতিতে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ১লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য্যে উভয় পক্ষের স্বজনদের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের সময় আমার পিতা নগদ ২ লক্ষ টাকা, ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকার মটর সাইকেলসহ ৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল প্রদান করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের কয়েকমাস ভালোভাবে সংসার করলেও আমার শ্বশুর আবু সাঈদ ঋণমুক্ত হওয়ার জন্য আমার পিতার কাছে আরো ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে চাপপ্রয়োগ করতে থাকেন। ফের টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা আমার ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু হয়। একপর্যায় ২৫/১২/২০১৯ তারিখে আমাকে স্বামীর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এরপরও আমার মা মিমাংসার জন্য শ্বশুর, শ্বাশুড়,ী স্বামী আল ইমরান ও মামা শ্বশুর আবু রায়হানকে দাওয়াত করে বাড়িতে ডেকে আনে। কিন্তু ৫লক্ষ টাকা না দিলে কোন কথা হবে না জানিয়ে তারা আমাকে বেধড়ক মারপিট করে। এসময় মামা শ্বশুর আবু রায়হান ছুটে এসে আমার পেটে স্বজোরে লাথি মারে। এতে আমার গর্ভের তিন মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। এঘটনায় আমি বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করি।
খাদিজা খাতুন বলেন, মামলার দায় থেকে রক্ষা পেতে আমাকে নাবালিকা উল্লেখ করে গত ৮ ফেব্রুয়ারী সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আল ইমরান দাবি করে, ‘চাচা আব্দুর রহিম নাকি তোকে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে এনে জোরপূর্বক বিয়ে দিয়েছে’। যা সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমার জন্ম তারিখ ১৫/৫/১৯৯৯। আমার বর্তমান বয়স ২০ বছর। আমাদের বিয়ে রেজিষ্ট্রিও হয়েছে। দীর্ঘ ১০ মাস ইমরান আমার সাথে সংসার করেছে। আমার গর্ভে তার সন্তান ছিল। সে নাকি আমাকে তালাক দিয়েছে এবং একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। প্রকৃতপক্ষে ৫ লাখ টাকা না পেয়ে এবং আমার পিতার দেওয়া প্রায় ৫লক্ষাধিক টাকার মালামাল আত্নসাত করার জন্য তারা এধরনের মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন চাচা আব্দুল হাকিম, দুলাভাই হাফিজুর রহমান।
তিনি আল ইমরানসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধামন্ত্রী, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।