
আবদুল্লাহ আল মাহফুজ:
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে ঘিরে বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। দলকে তৃণমূল থেকে শক্তিশালি করার লক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নির্দেশনা মোতাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিল গঠন করার ঘোষণা দিয়েছে পৌর আওয়ামীলীগ। আসন্ন কাউন্সিলকে সামনে রেখে ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটারদের দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে। পৌর শাখার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিল গঠনের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিল নির্বাচনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে ভোটের আমেজ। এরইমধ্যে ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা শুরু করেছেন সাধ্যমত লবিং-গ্রুপিং। সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থী নিয়ে চলছে ভোটারদের মধ্যে আলোচনা। অন্য পদগুলো নিয়ে আগ্রহ দেখা যাচ্ছেনা নেতাকর্মীদের মধ্যে । তবে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আতাউর রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে তিন জনের নাম শোনা যাচ্ছে, ইদ্রিস বাবু, রাকিবুল ইসলাম, মোঃ শফিউদ্দিন। পাশাপাশি আলোচিত তিনজন সম্ভাব্য সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হলেন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, বর্তমান প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলমগীর হোসেন এবং সদস্য নূরুল ইসলাম সাগর। সভাপতি আইয়ুব আলীর মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্তসভাপতির দায়িত্ব নেন সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ। তিন বছর পরপর কমিটি নবায়ন করার নিয়ম থাকলেও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক কারণে সময় মতো কমিটিগুলো গঠন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। দীর্ঘ নয় বছর পর আবার কাউন্সিল কে কেন্দ্র করে দুই নম্বর ওয়ার্ডের চারটি গ্রামের বিভিন্ন চায়ের দোকানে চলছে নির্বাচনী আলোচনা। মনজিতপুর গ্রামের মাসুমের চায়ের দোকানে রাজারবাগান কলেজ এলাকার বাবুসহ বিভিন্ন চায়ের দোকানে কমিটিকে ঘিরে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। দীর্ঘদিন পর দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পেরে অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে চলছে কুশল বিনিময়। সাধারণ নেতাকর্মীরা বলছে বিপদে-আপদে যে ধরনের সহযোগিতা তারা কামনা করেছিল বিগত দিনে বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীদের আশানুরূপ নেতৃত্ব দিতে পারেনি।
সভাপতি প্রার্থী রাকিবুল রাকিবুল ইসলাম জানান, বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে সব সময় দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। দলের দুর্দিনে যেসব নেতাকর্মী ছিলেন তাদেরকে ঠিকমতো মূল্যায়ন করা হয়নি, এজন্য অনেক নেতাকর্মীদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। রাকিবুল ইসলাম আরো বলেন, অন্যান্য অঙ্গসংগঠন থেকে এসে অনেক হাইব্রিড নেতা তৈরি হয়েছে। শেখ হাসিনার নির্দেশ মতো দলে হঠাৎ করে এসে কেউ সভাপতি অথবা সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে পারবেনা। যদি আমি সভাপতি পদের যোগ্যতা রাখি তাহলে নেতাকর্মীরা আমাকে মনোনীত করবে, আমি আশাবাদী। সভাপতি প্রার্থী ইদ্রিস বাবু বলেন, দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড শাখার কাউন্সিল শুরু হয়েছে। আতীতে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে দলের সঙ্গেই আছি। ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগকে একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমি সভাপতি প্রার্থী, আওয়ামী লীগের তূনমূলে নেতাকর্মীরা যদি আমাকে মনোনীত করে আমি তাদের সাধ্যমতো মুল্যায়ন করবো। আরেক সভাপতি প্রার্থী মোহাম্মদ শফিউদ্দিন বলেন, আমি রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়েল সাবেক প্রধান শিক্ষক । আমি দুই নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী। নেতাকর্মীরা যদি মনে করেন তাহলে আমি মনোনীত হতে পারব, এখন দায়িত্ব তৃণমূল নেতাকর্মীর। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আসাদুজ্জামান বলেন আমি ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাথে আছি। ২৫ বছরে যত আন্দোলন-সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছে প্রত্যেকটি আন্দোলন-সংগ্রামে আমি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছি। আমি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হেঁটে হেঁটে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ করি । পঁচানব্বই সাল থেকে দলকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছি। বর্তমান প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। দুই হাজার সাল থেকে দলকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছি। আমি সাধারণ সম্পাদক হতে পারলে বিশেষ করে অভিমানী কর্মীদের ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করবো। আমার ওয়ার্ড কে ঢেলে সাজানোর জন্য কাজ করবো। অনেক হাইব্রিড নেতাদের কারণে দলীয় কার্যক্রমে সিনিয়র নেতাদের অনুপস্থিতি এখন লক্ষ করা যায়। তাদের সাধ্যমতো মুল্যায়ন করা হবে। দুই নম্বর ওয়ার্ডকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিনত করবো। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাগর বলেন, আমি ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তূনমূলে যারা আওয়ামী লীগের কর্মী আছেন তারা আমাকে চাইলে আমি মনোনীত হতে পারব।
কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ পৌর শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সিনিয়র নেতারা আলোচনা করে একটি তারিখ নির্ধারণ করবেন। সে তারিখে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এবিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসেরুল হক বলেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিল শুরু হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের মাধ্যমে দলকে শক্তিশালী করা হবে।