নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপু ইউনিয়নের দহাকুলা সামাদের মোড় সংলগ্ন এলাকায় মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে হিজড়া ও গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে সদর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনাস্থল থেকে ৪ হিজড়াকে আটকের পর মুচলেকার মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দহাকুলা গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলী সরদারের পুত্র মটর শ্রমিক শরিফুল ইসলাম (শরীফ) এর বাড়ীতে ছোট বাচ্চা আছে এমন খবরে সেখানে সাতক্ষীরা শহরের হিজড়া রাশি, জাকিয়া ও দীপা হাজির হয়। এরপর সেখানে কিছু সময় অবস্থানের পর বাচ্চার দোয়া ও শুভ কামনা জানিয়ে তারা শরীফের স্ত্রীর নিকট তিন হাজার টাকা দাবী করে। এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শুরু হয় বাক-বিতন্ডা। এক পর্যায়ে তাদেরকে দেয়া হয় তিন শত টাকা। এতে তারা অখুশি হয়ে বাচ্চা টানা হেঁচড়া করতে থাকে। এমন সময় বাড়ির মালিক শরীফ উপস্থিত হয়ে এসবের প্রতিবাদ করলে শুরু হয় হাতাহাতি। এমনকি হিজড়া রাশি ও জাকিয়া চরম আকারে অশ্লীলতা শুরু করলে শরীফ দৌড়ে পূর্ব দহাকুলা জামে মসজিদে আশ্রয় নেয়। এ সময় হিজড়ারা মসজিদে উঠার চেষ্টা করলে স্থানীয় গ্রামবাসীর সাথে তাদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। অন্যদিকে এসব খবরে হিজড়াদের আর এক দলনেতা কুলসুম খবর পেয়ে সাতক্ষীরা থেকে তাদের সাথে যুক্ত হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শরীফ ৯৯৯ এ ফোন দিলে সাতক্ষীরা সদর থানার মাধ্যমে অবগত হয়ে ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস,আই তন্ময় সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ হিজড়া রাশি, জাকিয়া, দীপা ও কুলসুমকে আটক করে ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব দহাকুলা গ্রামবাসীদের সাথে সমঝোতা হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস,আই তন্ময় জানান, উভয়পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপন হয়েছে। ভবিষ্যতে তারা কখনো এমন আচারণ করবে না এমন শর্তে মুচলেকায় তারা মুক্তি পেয়েছে।
পূর্ব দহাকুলা মোড়ের ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ জানান, করোনার সময়ে এমনিতেই মানুষ অসহায়। এরপর আবার হিজড়াদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মান-সম্মানের ভয়ে এসবের কেউ প্রতিবাদ করে না।
পূর্ব দহাকুলা গ্রামের নুরুল ইসলাম বাবু জানান, হিজড়াদের চাহিদামত টাকা দিতে না পারলেই সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতনের খড়গ নামে। আজও তারা জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে দহাকুলা গ্রামের শরীফের বাড়ি থেকে তিনশত টাকা, হবি মুহুরীর বাড়ি থেকে এক হাজার টাকা ও আব্দুল্লাহর বাড়ি থেকে পাঁচশত টাকা আদায় করেছে। এলাকার মানুষ তাদের হাত থেতে পরিত্রান পেতে চায়।