আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
‘জন্মিলে মরিতে হবে’, এ সত্য থেকে মুক্তি পেতে মানুষ আত্মার অমরত্বে বিশ্বাস করেছে। এখন প্রশ্ন হল, শরীরের নশ্বরতা থেকেও কি মুক্তি পেতে পারে মানুষ? সোজা ভাষায়- মানুষ আর মরবে না। সবচেয়ে কঠিন রোগ থেকেও সেরে উঠবে। তার বুড়ো হওয়া আচমকা থমকে যাবে, ২০৩০ সালের মধ্যে নাকি যুগান্তকারী সেই সক্ষমতায় পৌঁছাতে চলেছে মানব সভ্যতা! এমনটাই দাবি করেছেন গুগলের প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়র তথা বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিবিজ্ঞানী রে কার্জউইল।
রে কার্জইউলের ভবিষ্যদ্বাণী উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। কারণ ৭৫ বছর বয়সি এই মানুষটি প্রথিতযশা বিজ্ঞানী। ১৯৯৯ সালে প্রযুক্তি বিজ্ঞানে বিরাট অবদানের জন্য পেয়েছেন ন্যাশনাল মেডেল অফ টেকনোলজি সম্মান। তাছাড়া তার প্রযুক্তি সংক্রান্ত একাধিক ভবিষ্যদ্বাণী পরবর্তীকালে সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে।
যেমন, ১৯৯০ সালে কার্জউইল ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, বিশ্বের সেরা দাবা খেলোয়াড়ও ২০০০ সালের মধ্যে কম্পিউটারের কাছে পরাজিত হবে। ১৯৯৭ সালে তা সত্য হয়। গ্যারি কাসপারভকে পরাজিত করে ডিপ ব্লু নামের কম্পিউটার।
নিজেকে ভবিষ্যৎবক্তাও বলেন থাকেন এই বিজ্ঞানী। ১৯৯৯ সালে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ২০২৩ সাল নাগাদ ১০০০ ডলারের একটি ল্যাপটপের স্টোরেজ ক্ষমতা মানুষের মস্তিষ্কের সমান হবে। প্রযুক্তিবিদদের বক্তব্য, বাস্তবেই মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে বর্তমানে পাল্লা দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স।
২০০৫ সালে ‘দ্য সিঙ্গুলারিটি ইজ নিয়ার’ নামে একটি বই লিখেছিলেন রে কার্জউইল। এই বই সম্পর্কিত কিছু ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সম্প্রতি। যা নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। সেখানেই তিনি দাবি করেছেন, ২০৩০ সাল নাগাদ মানুষ অবিনশ্বর জীবন অর্জন করবে, অর্থাৎ সে অমর হয়ে যাবে। কঠিন ব্যধিও মারতে পারবে না মানুষকে। ওই গ্রন্থে জেনেটিক্স, ন্যানোটেকনোলজি, রোবটিক্সসহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন কার্জউইল।
গুগলের প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়া জানিয়েছেন, মুশকিল আসান করবে ন্যানো প্রযুক্তি এবং রোবটিক্স। তিনি বিশ্বাস করেন, এই দুই প্রযুক্তির সাহায্যে ন্যানোবটের জন্ম হবে। এই ছোট বটগুলো মানবদেহের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে মেরামত করতে সক্ষম হবে। এর ফলেই বয়স বাড়লেও মারণ ব্যধি থেকে মুক্তি পাবে মানুষ। হয়তো কালে কালে বদলে যাবে ‘জন্মিলে মরিতে হবে’ এই আপ্ত বাক্যও! সূত্র: রয়টার্স।