খুলনা প্রতিবেদক: খুলনায় জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা তেল বিক্রির কমিশন, ট্যাংক-লরির ভাড়া বৃদ্ধিসহ ৩ দফা দাবিতে ১২ ঘণ্টার জন্য প্রতীকী ধর্মঘট পালন করছেন।
সোমবার (২২ আগস্ট) ভোর ৬টা থেকে খুলনার পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন এবং ১৫ জেলায় সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। যা চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি ও বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ ৪টি সংগঠন এই ধর্মঘট পালন করছে।
প্রতিকী ধর্মঘটের আওতায় যেসব জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে সেগুলো হল- খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ।
পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির ধর্মঘট চললেও বেসরকারি পাম্পগুলো থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ জ্বালানি পরিবেশক সমিতির খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের অফিস সেক্রেটারি সরোজ দাস পিন্টু।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটার্স, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে ১২ ঘণ্টার প্রতিকী ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। সোমবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- বর্তমান জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে আনুপাতিক হারে জ্বালানি তেল বিক্রয় কমিশন বৃদ্ধি করতে হবে।
অয়েল ডিপো থেকে ৪০ কিলোমিটারের বাহিরে ট্যাংকলরি ভাড়া বৃদ্ধি করতে হবে। পেট্রোল পাম্পের ওপর আরোপিত বিভিন্ন সংস্থার লাইসেন্স প্রথা বাতিল করতে হবে।
কর্মসূচি চলাকালে দাবি বাস্তবায়ন না করা হলে পরবর্তীতে সারাদেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ জ্বালানি পরিবেশক সমিতির খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের অফিস সেক্রেটারি সরোজ দাস পিন্টু বলেন, ‘বেসরকারি পাম্পগুলো থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটার্স, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্র থেকে এ প্রতিকী ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তবে তেল পরিবেশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য অ্যাসোসিয়েশন এই ধর্মঘটের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে প্রতি লিটার জ্বালানি তেলের মূল্যের (পূর্ব মূল্য) ২ দশমিক ৭১ টাকা কমিশন দেওয়া হয়। অতীতে কমিশন বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনে (বিপিসি) একাধিকবার আবেদন করেও কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। জ্বালানি তেলের মূল্য বর্তমানে অনেক বৃদ্ধি পেলেও তাদের কমিশনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় কমিশন প্রতি লিটার জ্বালানি তেলের বর্তমান মূল্যের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রদানের দাবি জানানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, দবর্তমানে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে আনুপাতিক হারে জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন বাড়াতে হবে। তা না হলে আমরা টিকে থাকতে পারবো না।দ
দআমরা ১২ ঘণ্টার জন্য প্রতীকী ধর্মঘট পালন করছি। খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ৩ ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধ এবং খুলনা বিভাগের ১০ ও বৃহত্তর ফরিদপুরের ৪ জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
এর আগে একই দাবিতে গত ৭ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য ধর্মঘট শুরু করেছিলো বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও জ্বালানি তেল পাম্প মালিক সমিতি। তবে ৯ ঘণ্টা ধর্মঘট পালনের পর প্রশাসনের আশ্বাসে স্থগিত করা হয়েছিলো সেই ধর্মঘট।
তবে খুলনা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে পেট্রোল পাম্প থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি চলছে।