দেশে ৪৮টি ল্যাবে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা হচ্ছে। তবে প্রতিদিন এই ৪৮টি ল্যাবের পরীক্ষার তথ্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে আসে না। স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১টি ল্যাবের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার সংখ্যা শূন্য। এতে একদিনের ব্যবধানে পরীক্ষার সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
আগের দিন অর্থাৎ ২৫ মে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো তথ্যে বলা হয়েছে ৬টি ল্যাবের নমুনা সংগ্রহ এবং ফলাফলের সংখ্যা শূন্য। এর মধ্যে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কিট সংকটে ২ দিন ধরে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ আছে। এছাড়া মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ৭ মে থেকে করোনা পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবের গত ২৩ মে থেকে কোনও রিপোর্ট আসছে না আর ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড হেলথ সার্ভিসেসের (আইদেশি) গত দুইদিন কোনও নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, ২৫ মে’র আগে ২৪ ঘণ্টায় এসব ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ছিল ১১ হাজার ৫৪১ টি , নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ হাজার ৪৫১ টি। তাতে শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৯৭৫ জন। এদিন ৬টি ল্যাবের নমুনা সংগ্রহ এবং ফলাফল শূন্য ছিল। মঙ্গলবার (২৬ মে) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয়, ৪৮টি ল্যাবের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৪ হাজার ৪১৬ টি, নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫ হাজার ৪০৭ টি। নমুনা পরীক্ষার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৬৬ জন। এদিন ১১টি ল্যাবের টেস্ট ফলাফল শূন্য পাওয়া গিয়েছে।
এর মধ্যে ঢাকায় আছে ৬টি এবং ঢাকার বাইরে ৫টি প্রতিষ্ঠান। ঈদের দিন ঢাকার যেসব ল্যাবের পরীক্ষার সংখ্যা শূন্য সেগুলো হলো- ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড হেলথ সার্ভিসেস (আইদেশি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, এভারকেয়ার হাসপাতাল, এনাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, বায়োমেড ডায়াগনস্টিক, ল্যাবএইড হাসপাতাল।
ঢাকার বাইরে ল্যাবগুলো হলো চট্টগ্রাম ভেটরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ।
এগুলোর মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, সেচ্ছাসেবীদের দিয়ে করোনা পরীক্ষা করা হয় কয়েকটি ল্যাবে। যার ফলে ঈদের জন্য ছুটি দিতে হয়েছে তাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম এ মালেক বলেন, কারিগরি কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে আমাদের ল্যাব। এটি হয়তো আমরা আর অল্প কয়দিন চালাতে পারবো। তবে ঈদের দিন ছুটি দেওয়া হয়েছিল সবাইকে যার কারণে ল্যাবে পরীক্ষার কাজ হয়নি। এখানে সবাই সেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে। তবে আগামীকাল থেকে আবার পরীক্ষা শুরু হবে, ৩১ তারিখ পর্যন্ত করতে পারবো বলে আশা করছি।
চট্টগ্রাম ভেটরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা টেস্টিং ল্যাবের ইনচার্জ অধ্যাপক ড. জুনায়েদ সিদ্দিকী বলেন, আমাদের ল্যাবে পরীক্ষা ঈদের দিন বন্ধ ছিল। এখানে সবাই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার জন্য ছুটি চাইলে তো আমরা না দিয়ে পারি না।
সুত্র: বাংলা ট্রিবিউন