অনলাইন ডেস্ক :
মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসকসহ চারজনকে কারণ দর্শাতে বলেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানাতে ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার (২৩ মার্চ) কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার-রাজস্ব (আরডিসি) নাজিম উদ্দীন, সহকারী কমিশনার (এসি) এসএম রাহাতুল ইসলাম এবং সহকারী কমিশনার (এসি) রিন্টু বিকাশ চাকমাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তাদের ১০ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।’
পরবর্তী পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত এই চার কর্মকর্তার বেতন বন্ধ থাকবে কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘এখন সংযুক্ত রয়েছে। আমরা পদায়ন করলে বেতন পাবেন।’
পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে চার কর্মকর্তা জবাব দিতে না পারলে তারা সময় চাইতে পারবেন বলেও জানান জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় প্রথম পর্যায়ে তাদের প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এরপর ১০ দিনের মধ্যে কার্রণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে। তার বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়। এরপর গভীর রাতে জেলা প্রশাসকের অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের দণ্ড দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পরে ওই সাজার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৫ মার্চ বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি রিট দায়ের করেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আরিফুলের ওই সাজার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিতও করেছেন আদালত।
জানা যায়, জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফুল এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি।
এছাড়া, সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়।
এই ঘটনায় কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সূত্র-বাংলা ট্রিবিউন