
আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনিতে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির বাসা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শন তালগাছে ঝুলে থাকা বাবুই পাখির বাসা। নিপুণ কারিগরি ও মেধা খাটিয়ে বাবুই পাখিরা তালপাতা, খেজুর পাতা, ঝাউ ও লতা-পাতা দিয়ে মজবুত ও আকর্ষণীয় বাসা তৈরি করে। কিন্তু তালগাছ ও খেজুরগাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এই অপরূপ দৃশ্য আজ দুর্লভ হয়ে উঠছে। বাবুই পাখি শিল্পের নিখুঁত কারিগর। কবির কালজয়ী ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতার নায়ক এই পাখি আজ অস্তিত্ব সংকটে। পরিবেশবিদদের মতে, তালগাছ ও খেজুরগাছ কমে যাওয়ায় বাবুই পাখির আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে, যা তাদের বিলুপ্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে। বাবুই পাখির বাসা ঝড়-বৃষ্টিতেও মজবুত থাকে। বাসা তৈরি শেষ হলে পুরুষ বাবুই সঙ্গী খুঁজতে বের হয়। সঙ্গী আকৃষ্ট করতে সে খাল-বিলের পানিতে গোসল করে গাছের ডালে নেচে বেড়ায়। রাতের বেলায় বাসার ভেতরে গোবর রেখে জোনাকি পোকা ধরে এনে আলো তৈরি করে, যা প্রকৃতির এক অপূর্ব বিস্ময়।
প্রজনন মৌসুমে পুরুষ বাবুইয়ের রং গাঢ় বাদামি হয়, অন্য সময় এটি হয় হালকা বাদামি। আগে তালগাছে ঝুলন্ত বাবুই পাখির বাসা আর তাদের কিচিরমিচির শব্দ ছিল চিরচেনা দৃশ্য। এখন সেই দৃশ্য বিলীন হতে বসেছে। নির্বিচারে তালগাছ ও খেজুরগাছ কাটার ফলে বাবুইসহ দোয়েল, চড়ুই, শালিক, কোকিলসহ অনেক পাখির অস্তিত্ব হুমকির মুখে।
প্রকৃতির এই শৈল্পিক বাসা রক্ষায় এখনই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। বেশি করে তালগাছ ও খেজুরগাছ লাগালে বজ্রপাতের ঝুঁকি কমবে, আবার খেজুরের রস ও গুড়ের চাহিদাও মিটবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এবং পাখিদের টিকিয়ে রাখতে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।