জাতীয় ডেস্ক:
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা সকল নেতা-কর্মীকে মনে রাখতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ছাত্রলীগকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলা, ঐতিহাসিক ৬ দফা, ১১ দফাকে নিয়ে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলা এবং সর্বোপরি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তাই ছাত্রলীগকে সর্বজন জনপ্রিয় সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার বিকালে শরীয়তপুর পৌরসভা অডিটোরিয়ামে শরীয়তপুরের দুই কৃতিসন্তান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি ও উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শামীম বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আইয়ুবের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। তাদের আমলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অস্ত্রের ঝনঝনানিতে পরিণত হয়েছিল। গত ১৩ বছরে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি নেই, অস্ত্রের মহড়া নেই, সেশন জট নেই। বছরের প্রথমদিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অনন্য কৃতিত্ব।
এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে চলছেন। তিনি প্রতিটি উপজেলা শহরে থাকা মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরকারিকরণ করছে। তিনি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করেছেন। পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নতুন ভবন করে দিচ্ছেন। তিনি দেশের কৃষি শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। এজন্য জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলছেন। এছাড়া শিক্ষকদেরও তিনি নানাভাবে সম্মানিত করছেন। তাই আগামী নির্বাচনেও জনগণ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনবে।
উপমন্ত্রী শামীম বলেন, করোনাকালে ছাত্রলীগের নেতারা মানুষের বাড়ি খাবার পৌঁছে দিয়েছে, লাশ দাফন ও সৎকার করেছে, অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়েছে। কৃষকের ধান কেটে গোলায় তুলে দিয়েছেন। ছাত্রলীগ হচ্ছে পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ মানবিক ছাত্র সংগঠন। তাই ছাত্রলীগকে সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে ইকবাল হোসেন অপু এমপি বলেন, বিশ্ব দরবারে বাঙালি জাতি মাথা উঁচু করে চলবে, সেটিই হবে আমাদের আজকের দিনের প্রতিজ্ঞা। যে সংগঠন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গড়ে তুলেছিলেন মাতৃভাষা আদায়ের জন্য, যে সংগঠন এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখে গেছে, যে সংগঠন এদেশের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে, সেই সংগঠনের নামই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তাই ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে ক্লিন ইমেজ নিয়ে আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে কাজ করতে হবে।
এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, এখনো একাত্তর ও পঁচাত্তরের পরাজিত শক্তির প্রেতাত্মারা ঘুরে বেড়াচ্ছে এই স্বাধীন বাংলাদেশে। এই দেশের আলো বাতাসে বেড়ে উঠলেও তাদের মনে এখনো পাকিস্তান প্রীতি। যারাই অগ্নিসন্ত্রাস করে দেশকে উৎতপ্ত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আগামীদিনে আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত করবো।
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ইনান বলেন, ছাত্রলীগের সৃষ্টিই হয়েছে চ্যালেঞ্জ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। সূচনা থেকে অদ্যাবধি ছাত্রলীগের সব অর্জনই আকাশসম প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে। ছাত্রলীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো একজন সরকার প্রধান পেয়ে আমরা বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা সৌভাগ্যবান। আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরঙ্কুশ বিজয়ের পথে শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এবং একই আওয়াজ তুলে ছাত্রলীগ নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করবে।
জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহসিন মাদবরের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ উজ্জামান রাশেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম তপাদার।
প্রধান বক্তা ছিলেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও বিশেষ বক্তা ছিলেন ছাত্রলীগের
সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি সাগর আহমেদ ও দক্ষিণের সজল কুন্ডু।