
জি,এম নজরুল ইসলাম: সাতক্ষীরা জেলাধীন শ্যামনগরের সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মেয়াজ্জেম হোসেন (ইনডেক্স নং—৫৫২৮৮৮) এর বিরুদ্ধে অবৈধ কার্যকলাপ, সীমাহীন দূর্নীতি ও সহকারি শিক্ষক (কম্পিউটার)— এর জাল কম্পিউটার সনদে বরখস্তকারী শিক্ষক আরিফা এদিব চৌধুরীকে দূর্নীতির মাধ্যমে পুনঃবহাল এবং জাল সনদে ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগে উপ—পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, খুলনা অঞ্চল, খুলনাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন, এ কে.এম মাহফুজুর রহমান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফা এদিব চৌধুরী সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার)পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। কিন্তুু, তার কম্পিউটার বিষয়ে তেমন কোন দক্ষতা না থাকায় কমিটির নিকট তার সার্টিফিকেটের বিষয়ে সন্দেহের সৃষ্টির্ হলে বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার কম্পিউটার সনদটি যাচাইয়ের জন্য সভাপতি কতৃর্ক জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা অফিসার সনদ পত্র যাচাইয়ের জন্য জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমী (নেকটার) পূর্বের নট্রামস, বগুড়াতে প্রেরণ করেন। তদ্প্রেক্ষিতে নেকটারের উপ—পরিচালক কতৃর্ক বিগত ২৯/১১/২০২১ খ্রিঃ সনদ যাচাই সংক্রান্ত কমিটির প্রতিবেদনে রেজিষ্টার যাচাইয়ে দেখা যায়, “সনদ টি” নেকটার (সাবেক নট্রামস কতৃর্ক ইস্যুকৃত নয়, সনদটি জাল/ভূঁয়া মর্মে উল্লেখ করেন”। সেকারণ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি কতৃর্ক নিয়মতান্ত্রিক ভাবে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ১২/০৪/২০২২ খ্রিঃ তারিখে অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির ০৫/২২ নং রেজুলেশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৮/০৪/২০২২ খ্রিঃ তারিখে তাকে স্থায়ী ভাবে বরখস্ত করা হয়। এ ব্যাপারে গত ১১/১২/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে উক্ত কম্পিউটার শিক্ষকের এম,পি,ও হতে নাম কর্তনের জন্য প্রধান শিক্ষক কতৃর্ক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা ভবন, ঢাকাতে আবেদন করেন। তার বেতন—ভাতাদি উত্তোলন বন্ধ থাকে। কিন্তুু, পরবর্তিতে প্রধান শিক্ষকের যোগ সাজসে তার স্বামী আলতাফ হোসেনকে এডহক কমিটির সভাপতি করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তার জাল সনদটির বৈধতা দিয়ে তার চলমান বেতন গ্রহণ করত বকেয়া বেতন—ভাতাদি উত্তোলনের পায়তারা করিতেছে। ১৯৯৯ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিকৃত ছাত্র সুপিয়ান গাজীকে মোটা অংকের অর্থের সুবিধা নিয়ে স্বহস্তে ৯ম শ্রেণি পাসের সনদ দিয়ে তাকেই আবার আর্থিক সুবিধার মাধ্যমে নৈশ প্রহরী পদে চাকুরী দিয়েছেন। উল্লেখ্য, উক্ত পদে চাকুরী প্রত্যাশী ফিরোজ আলমের নিকট থেকে ৮,০০,০০০/— (আট লক্ষ) টাকা নিয়ে চাকুরী না দিয়ে অবৈধ সনদধারী সুফিয়ান গাজীকে নিয়োগ দেয়। পরবর্তিতে চাকুরী প্রত্যাশি ফিরোজ আলম বিজ্ঞ আমলী ৫নং আদালত সাতক্ষীরাতে সিআর ৭৪০/২২(শ্যাম) নং একটি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটির তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা শাখাকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমান ফারাজি এস.আই (নিঃ) কতৃর্ক ১৪/১১/২০২২ তারিখের তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা উল্লেখ পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এছাড়া অনুরুপ চাকুরী প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক জনের নিকট হতে অর্থ আত্মসাত করেন যাহার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী ব্যক্তিগণ কতৃর্ক বিজ্ঞ আমলী আদালত সাতক্ষীরাতে ৭৬৯/২২(শ্যাম) ও ৭৭০/২২(শ্যাম) আরও দুটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তুু তৎকালীন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এবং ভয় ভীতি প্রদর্শন করে তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে শুনানিতে হাজির থেকে বিরত রেখে মামলা দুটি খারিজ করিয়ে নেন। সুন্দরবন মাঃ বিঃ ডিজিটাল ল্যাব অনুমোদন না থাকায় অর্থ হাতানোর উদ্দেশ্যে দুই দুই বার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়ে চাকুরী প্রত্যাশিদের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করেন। যা এথনও পর্যন্ত অমিমাংসিত অবস্থায় আছে।
এ ব্যাপারে সুন্দরবন মাঃ বিঃ এর প্রধান শিক্ষক মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেনের ০১৩০৯ ১১৮৯২১নং মোবাইল নম্বরে জানতে চাইলে তিনি বলেন আদালতে মামলা থাকায় তার নাম কর্তন করা সম্ভব হয়নি। উনাকে প্রশ্ন করা হয় বিগত কমিটির সভাপতি আদালতে বাদী হয়ে মামলা করেন পরবর্তিতে আপনি অভিযুক্ত শিক্ষকের স্বামী আলতাফ হোসেনকে সভাপতি হিসেবে তার নাম শিক্ষা বোর্ডে ১নং ক্রমিকে প্রেরণের মাধ্যমে কমিটি অনুমোদন করান এবং উক্ত আলতাফ হোসেনকে দিয়ে আদালতে আবেদনের মাধ্যমে তার স্ত্রী আরিফা এদিব চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের করা কেস প্রত্যাহার করে নেন। এই বিষয়টি জনমনে এবং প্রশাসনের সন্দেহের সৃষ্টি করে কিনা জবাবে তিনি বলেন জি।
উক্ত প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হবে।