
জি,এম,নজরুল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জ, শ্যামনগর থেকে: করোনা ভাইরাসের কারণে জীবনের সবচেয়ে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। গত কয়েক মাস কোন আয় রোজগার না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতার জীবন যাপন করছে। অনেকের দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে। বিশেষ করে দিন এনে দিন খাওয়া সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার মানুষের; যাদের জীবনযাত্রা সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল।
১ জুলাই থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাশ পারমিট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তুলে নেয়া হয়েছে বলে সুন্দরবন বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে। এর ফলে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার হাজার হাজার পরিবার চরম উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ও জেলেদের মাধ্যমে জানা গেছে, ১ জুলাই থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরার পাশ পারমিট তুলে নেয়া হয়েছে। এতে সুন্দরবনের পাশর্^বর্তী এলাকার সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল পেশাজীবীরা চরম বেকার ও অসহনীয় দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে। ছেলে/মেয়েদের পড়ার খরচ এবং সাংসারিক নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, ডাল, বাজার ঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে তাদের বিকল্প কোন আয়ের পথ খোলা নেই বলে তারা জানান।
বাইরে করোনার ভয় ঘরে থাকলে হালখাতা। এই অবস্থায় তাদের জন্য মরার উপর খড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে এনজিওর ঋণের কিস্তি। এই দুঃসময়েও এনজিওগুলো কিস্তির টাকার জন্য চাপাচাপি করছে। ফলে এদিকে আর্থিক কষ্ট, অন্যদিকে সামাজিক বাস্তবতার যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে জেলে বাওয়ালিদের। এ পরিস্থিতি বাস্তবিকই দুঃখজনক।
করোনার ব্যাপকতা যেন মধ্যম আয়ের মানুষদের জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে। করোনা কাল কবে শেষ হবে সে বিষয়টি অনিশ্চিত থাকায় তাদের অবস্থার আশু পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
এতে জেলে পরিবাগুলোর মধ্যে তৈরী হয়েছে চরম হতাশা, ক্ষোভ ও অশান্তি। তারা জানান, বছরের শুরুতে যদি বিএলসি নবায়ন না হতো তাহলে বিকল্প আয়ের পথ বেছে নেয়া যেতো। এমন এক সময় এসে পাশ পারমিট বন্ধ করে দেয়া হল যে সময় বিকল্প কোন আয়ের পথ খোলা নেই। এ অবস্থার মধ্যে তারা তাদের ছেলে/মেয়ে ও সংসার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।