প্রধান পৃষ্ঠপোষক উপ-পরিচালক সাহাজান কবির
আহাদুর রহমান জনি: সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিসকে ঘিরে শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক সাহাজান কবির। আবেদন জমা পড়লেই টাকার গন্ধ খোঁজেন পাসপোর্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী। আবেদনে কোন ভুল থাকলে অথবা নির্ধারিত দিনের বদলে অন্য দিন আসতে বলে, সার্ভার বন্ধ ইত্যাদি ভুল তথ্য দিয়ে হয়রানির সীমা ছাড়িয়ে ঘুষ আদায় করা হয়। সরকারের জনগুরুত্বপ‚র্ণ সেবার দপ্তরটি এখন জনহয়রানির সীমা ছাড়িয়েছে।
সাতক্ষীরার পাসপোর্ট অফিসে দালাল ছাড়া পাসপোর্ট মেলে না। পাসপোট সেবায় স্বচ্ছতা আনতে সরকার অনলাইনে আবেদনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। দালাল মুক্ত পাসপোট অফিস সহ অনেক পদক্ষেপ গ্রহন করার ফলে স্বচ্ছ সেবার পরিবর্তে সেই অনলাইনের ডিজিটাল আবেদনকে হয়রানির হাতিয়ার বানিয়েছে চক্রটি। পাসপোট আবেদনের অনলাইন কপি, ব্যাংক ড্রাফট সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা দেয়ার সময় পাসপোর্ট অফিসের তালিকা ভুক্ত দালালদের বিশেষ চিহ্ন দেওয়া থাকলে সহজেই পাসপোর্ট মেলে। কিন্ত দালাল ছাড়া সরাসরি গেলে ছোট খাটো সংশোধন যোগ্য ত্রুটিকে পুঁজি করে আবার কোন কোন কোন সময় নিজেদের দোষ সার্ভারকে দিয়ে দিনের পর দিন সেবা গ্রহীতাকে হয়রানি করতে থাকে। হয়রানির মাত্রা এতটাই বেশি যে, বারে বারে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে অর্থ ব্যয় করতে করতে এক সময় তা পাঁচ অঙ্কের প্রাথমিক ঘর ছাড়িয়ে যায়। এর মাধ্যমে সেবা গ্রহীতাদের পরিষ্কার বার্তা দেয়া হয় দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করা যায়না। একপ্রকার বাধ্য হয়েই দালালের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে পাসপোর্ট গ্রহণ করতে হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক সাহাজান কবিরের পৃষ্ঠপোষকতায় অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তারা ও ট্রাভেল এজেন্সি নামধারী অনলাইনে আবেদন ফরম প‚রণ করার দোকানের নামে শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। সিন্ডিকেটটি এতটাই শক্তিশালী যে আবেদনকারী যেই হোকনা কেন অবশ্যই তাকে উপরি দিয়েই পাসপোর্ট পেতে হবে। এ ক্ষেত্রে ৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট প্রতি ব্যাংক ড্রাফটের পর অতিরিক্ত ১ হাজার ৫শ টাকা সালামি দিতে হয়। যদি ওই পাসেপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর হয় তাহলে সেই সালামি হয় ৩হাজার টাকা।
এখানেই শেষ নয় আরও আছে। পাসপোর্টের আবেদনের জন্য জমাকৃত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের কোনটিতে যদি ভুল ধরা পড়ে তাহলে ওই ঘুষের পরিমান কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা কেউ বলতে পারেনা। পাসপোর্ট রিনিউয়ের ক্ষেত্রে হয়রানির গভীরতা আরও বেশি। তাই ঘুষের পরিমানও বেশি। যদি কারও জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে পাসপোর্টের নামের বানান মিল না থাকে অথবা অন্য কোন তথ্য যদি ভুল থাকে সেক্ষেত্রে ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষের টাকা গুনতে হয়।
জেলা পাসপোর্ট অফিসের হয়রানির সীমা কোথা গিয়ে শেষ হবে জনমনের এ প্রশ্নের উত্তর দিবেন কে? ২য় পর্বে থাকবে গ্রাহক হয়রানি ও চাঁদা আদায়ের শিকার ভুক্তভোগীদের মতামত। জানতে চোখ রাখুন সাতনদীতে...... ২য় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন