বিক্ষোভে ফেটে পরে খলিষখালীর কয়েক’শ নারী-পুরুষ;
সংসদ সদস্যর চাপে নিয়োগ বোর্ড করতে অনুমতি;
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন;
পরীক্ষা বন্ধ করে ফিরে গেলেন শিক্ষা কর্মকর্তারা;
নিজস্ব প্রতিবেদক: খলিষখালী ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ার্কাস পাটির কেন্দ্রীয় নেতা মোল্লা সাবীর হোসেন ও গাছা মাধ্যমিক বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক গোপনে নিয়োগ বোর্ড করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছে। খলিষখালী ইউনিয়নের গাছা, বাগডাঙ্গা, কৃষ্ণনগর, দূর্বাডাঙ্গা এলাকার কয়েক‘শ নারী পুরুষ ঘেরাও করে তাদের। বিকেল ৪ টায় গাছা বাজারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতিকান্ত সরকার ঘন্টাখানিক অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ এসে তাকে বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করে। পরে গাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস কক্ষে নিয়োগ বোর্ড বসানোর তোড়জোড় করলে সেখানেও ঘেরাও করে স্থানীয় লোকজন। এসম অফিস রুমে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সাবীর হোসেন অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এক পর্যায় খলিষখালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আজিজুর রহমান বিক্ষুব্দ লোকজনকে শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে পাটকেলঘাটা থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রে আনে।
স্থানীয় লোকজন জানান, গাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ৪ টি চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে পরিচালনা পরিষদের সভাপতি চেয়ারম্যান সাবীর হোসেন ও প্রধান শিক্ষক রথিন্দ্র নাথ মন্ডলের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ ওঠে। শুক্রবার সাতক্ষীরা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ বোর্ড আয়োজন করে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। এদিকে নিয়োগ বানিজ্যে প্রতিবাদে স্থানীয় অভিভাবক, চাকরী প্রত্যাশী কয়েকজনসহ এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার গাছা হাইস্কুলের সামনে সড়কে মানববন্ধ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে পাতানো নিয়োগ বোর্ড বন্ধের দাবী জানান ম্যানেজিং কমিটির দুই জন। এঘটনায় জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন শুক্রবারের নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করতে বৃহস্পতিবার রাতে নিয়োগ বোর্ডের দায়িত্বে খাকা সাতক্ষীরা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ মন্ডলকে জানিয়ে দেন। কিন্ত জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অমান্য করে শুক্রবার সকালে সরকারী স্কুলে নিয়োগ বোর্ড শুরু করে এসময় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সেই নিয়োগ বোর্ডের চাকরী পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে ওয়ার্কাসপার্টির নেতা স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লার চাপে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শনিবার বিকেলে গাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ বোর্ড করতে অনুমতি দেন। সেই অনুযায়ী শনিবার বিকেলে গাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ বোর্ডের আয়োজন করে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। পাতানো এ নিয়োগ পরীক্ষার খবর পেয়ে চাকরী প্রত্যাশীরাসহ এলাকার কয়েকশ নারী পুরুষ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে এবং নিয়োগ বোর্ড বন্ধের দাবী জানায়। এসময় চেয়ারম্যান সাবীর হোসেন ফোন করে খলিষখালী থেকে তার লোকজন নিয়ে চেষ্টা করে নিয়োগ পরীক্ষা করাতে। এসময় লোকজন আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রে আনে। এসময় আন্দোলনের মুখে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগীত করতে বাধ্যহন বিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রথিন্দ্র নাথ মন্ডল জানান, তিনি উপরের মহলের নির্দেশে নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেন। পরে বিক্ষোভের মুখে তা বন্ধ করে দেন বলে স্বীকার করেন তিনি।