নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠান প্রধানের সরকারি কন্ট্রোল প্যনেলে পিডিএস.এআইবি.গভঃ.বিডি/এডমিন এ মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারকে ধোকা দিয়ে এবং প্রতারণা করে দীর্ঘ দিন একই কর্মস্থলে থাকার পায়তারা করাসহ নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনিছুর রহমানের (পিডিএস নং: ২০১৬৭০০৬০৭) বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তথ্য বাতায়নে তিনি তার কর্মস্থল সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের তারিখ দিয়েছেন ০৬/০৫/২০২৪ সালে।
অথচ তিনি এই সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন ০১/০৯/২০১৩ ইং তারিখে। আসলে তিনি ওয়েবসাইটের কন্ট্রোল প্যনেলে তথ্য বাতায়নে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা করে এই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন থাকার পায়তারা করছেন। যা শিক্ষা নীতিমালা বহির্ভূত এবং বেআইনি শাস্তিমূলক অপরাধ। সম্প্রতি ৯জন শিক্ষক তাদের প্রাপ্য শ্রান্তি বিনোদন ভাতা অনুমোদনের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, মো. আনিছুর রহমানের নিকট নথি উপাস্থাপন করলে তার ঘনিষ্ঠ ২জন শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন (পিডিএস নং: ২০১৬৭০৭৭৪৪) ও সফিউল ইসলাম (পিডিএস নং: ২০১৬৭০২৫৯২) তাদেরকে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু অন্যান্য শিক্ষকদেরকে শর্ত দেওয়া হয় যে, ২০২৪ সালের বার্ষিক পরীক্ষার (তৃতীয় থেকে নবম শ্রেণির) একাধিক দিনের একাধিক বিষয়ের প্রশ্ন পত্রে অসংখ্য ভুলের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অদক্ষতার জন্য তার বিরুদ্ধে অনলাইন পোর্টাল সমাজের আলো পত্রিকায় যে লেখা ছাপানো হয়েছে সেই সংবাদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পক্ষে প্রতিবাদ দিয়ে আসলে তাদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতা অনুমোদন করা হবে সাফ জানিয়ে দেন। সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদটি দীর্ঘদিন ধরে শুন্য আছে। বর্তমানে মো. আনিছুর রহমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের দায়িত্ব পালন করছেন। তার মূল পদ সিনিয়র শিক্ষক। তিনি একাধারে সহকারী প্রধান শিক্ষককের (চলতি দায়িত্ব) পালন করছেন এবং প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। বিদ্যালয়টিতে পাঠদান ও প্রশাসনিক ধারাবাহিকতায় যথেষ্ঠ বিঘ্ন ঘটছে। তাছাড়া বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১৫ জনের বেশি সিনিয়র শিক্ষক কর্মরত আছেন। যেহেতু মো. আনিছুর রহমান একজন সিনিয়র শিক্ষক এবং তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ায় অন্যান্য সিনিয়র শিক্ষকরা তার নির্দেশনা যথাযথভাবে আন্তরিকতার সাথে পালন করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেননা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সরাসরি হস্তক্ষেপে বিদ্যালয়ের হোস্টেলের নিচতলার দুটি রুমে প্রভাতি শিফটের সিনিয়র শিক্ষক, হারাধন কুমার আইচ (পিডিএস নং: ২০১৬৭০৭৩৭৪) প্রাইভেট পড়িয়ে মাসে এক লাখেরও বেশি টাকা উপার্যন করছেন। তিনি প্রভাতী শিফটের শিক্ষক হয়ে দিবা শিফটের ছাত্রীদের সরকারি বাধ্যতামূলক ক্লাস থেকে বঞ্চিত করে হোস্টেলের নিচতলায় প্রাইভেট টিউশনি করেন। এতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ঐ টাকার একটি অংশ পান। শিক্ষক হারাধন কুমার আইচ ১৫ বছর ধরে এই বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন।
তিনি ছাত্রীদের জড়িয়ে ধরে বিদ্যালয় ক্যামপাশে রং মাখামাখির ছবি তুলেছেন অপর শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম সিনিয়র শিক্ষক (ভূগোল) (অর্ধ-বার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, নারী সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, গালিগালাজ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করে অন্য সহকর্মীদের হুমকি, ইসলামের শিক্ষককে গালিগালাজ করেন। যে কারণে বিদ্যালয়টিতে পাঠদান ও প্রশাসনিক ধারাবাহিকতায় যথেষ্ঠ বিঘ্ন ঘটছে। সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, মো. আনিছুর রহমান ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক ও কর্চারীদের সাথে অত্যন্ত দুরব্যবহার করছেন, ৯ম, দশম শ্রেণির মেয়েদের পিঠে থাপ্পর মারতেছেন, হিজাব ও বোরকা নিয়ে কটুক্তি করছেন, যে অভিভাবক প্রতিবাদ করছেন তাদেরকে বাসায় দাওয়াত করে খাওয়াচ্ছেন ও মাফ চাচ্ছেন, যেন সরকার এখানে কোন প্রধান শিক্ষক পদায়ন না করেন। এতে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারী, অভিভাবক ও তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। নভেম্বর ও ডিসেম্বর ২০২৪ মাসে ছাত্রীদের নিকট থেকে টিফিন ফি আদায় করা হলেও তাদের টিফিন খেতে দেওয়া হয়নি, অথচ শিক্ষকরা পরীক্ষার হলে ছাত্রীদের টাকায় ছাত্রীদের সামনে টিফিন খেয়েছেন। বিদ্যালয়ে বর্তমানে টিফিনের মান খুবই খারাপ। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অত্যন্ত ঘনিষ্ট মো. উজায়ের হোসাইন (পিডিএস নং: ২০২২৭১৭৭৭৪) সহকারী শিক্ষক, ইসলাম শিক্ষা, অর্ধ বার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন পত্র প্রনয়ণে ইচ্ছাকৃতভাবে কঠোরতা অবলম্বনকারী (২৫ জন নবীর নাম লিখতে ৫ মার্ক, যা শুধুমাত্র তার নিকট কোচিংকারী ছাত্রীরা ভালো লিখতে পেরেছে। সেই গোপনীয়তাও ফাঁস হয়ে গেছে। ২০২৪ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় ৯বম শ্রেণির ইংরেজী প্রশ্নের ৭ দাগের একটা লাইনই ছিলনা, ৪ দাগের কবিতা অংশের প্রথম প্রশ্নটাও ভুল, প্যাসেজ’র বানান ভুল। ৭ম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষায় দৃশ্যপট ভুল, ৬ষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাসেও নানাবিধ ভুলে ভরা প্রশ্নে ২০২৪ সালের বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয় সংশি¬ষ্ট যাকে দিয়ে প্রশ্ন পত্র টাইপ করেছেন তার মেয়ে ঐ বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখার ৯বম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ৯বম শ্রেণির গণিত প্রশ্ন পত্রেও একাধিক ভুল ছিল। এছাড়াও দাগ নম্বর ভুল, ভগ্নাংশের চিহ্ন ভুলসহ বিভিন্ন ভুলে ভরা প্রশ্ন নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে অতিরিক্ত সময় নষ্টসহ বার্ষিক পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা ব্যাপক হয়রানীর শিকার হওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রেস ও সরকারের রাজস্ব বঞ্চিত করেছেন অদক্ষ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। এই বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষক ১২ থেকে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। দীর্ঘদিন একই কর্মক্ষেত্রে কাজ করে কাউকে তোয়াক্কা না করে স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছেন। মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বাংলাদেশ ঢাকা’র সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও সচেতন মহল। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তারা অতি দ্রুত সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককের শূন্য পদে জরুরী ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক পদায়ন করলে সকল সমস্যার সমাধানসহ বিদ্যালয়টিতে পূর্বের সফলতা ও শিক্ষার মান ফিরে আসবে বলে আশা করেন তারা এবং সেই সাথে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।