আহাদুর রহমান: গত ১৮ নভেম্বর মাউশি অধিদপ্তর এক নির্দেশনায় জানায়, বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো (এমপিওভুক্ত ও এমপিওবিহীন) শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুধু টিউশন ফি নিতে পারবে। অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনর্ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনো ফি নেবে না। আর নেওয়া হলেও তা ফেরত দেবে অথবা তা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করবে। অন্য কোনো ফি অব্যয়িত থাকলে একইভাবে তা-ও ফেরত দেবে বা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করবে। পাশাপাশি বলা হয়, ২০২১ সালের শুরুতে যদি কভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, তাহলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিফিন, পুনর্ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন, উন্নয়ন ফির নামে অর্থ নিতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
সাতক্ষীরা সদরের বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে উল্টো চিত্র। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের নির্দেশনা মানছে না। নিয়ম ভঙ্গ করে ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। যেসব ফি অত্যাবশ্যকীয় নয়, সেসবও নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এক থেকে দুই মাসের অগ্রিম বেতন নেওয়া হচ্ছে। এমনকি গত শিক্ষাবর্ষে আদায় করা অতিরিক্ত ফি সমন্বয় করা হয়নি।
সাতক্ষীরা তালতলা স্কুলে নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা। অন্যান্য আনুসাঙ্গিক ফি নেওয়া হবে দুই মাস পরে। সাতক্ষীরা টাউন গার্লস হাইস্কুলে শ্রেণী ভেদে নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি ৬৫০ থেকে ৮৫০ টাকা। ভর্তি ফির সাথে এক মাসের বেতন অগ্রিম আদায় করা হয়েছে। ভর্তি ফির সাথে আনুসাঙ্গিক ফি’ও নেওয়া হয়েছে।
নবারুন বালিকা বিদ্যালয়ে ক্লাস সিক্সে ৫৫০টাকা ভর্তি ফি নেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী দশম শ্রেণী পর্যন্ত বর্ধিত ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে।
পি এন হাই স্কুলে নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফরম বাবদ ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ভর্তি ফি ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ১১৫০টাকা থেকে দু’হাজার টাকা পর্যন্ত। এক মাসের বেতনও অগ্রীম নেওয়া হচ্ছে।
পলাশপোল আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস সিক্সে ভর্তি ফি ৮৯০ টাকা।
পুলিশ লাইন স্কুলে ভর্তি ফি, বেতন ও আনুসাঙ্গিক সকল ফি সহ ক্লাস সিক্সে নেওয়া হয়েছে ৬৫০০ টাকা।
রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস সিক্সে ভর্তি ফি ১০৯০ টাকা। এর মধ্যে এক মাসের বেতন ১৪৫ টাকা অর্ন্তভুক্ত। অন্যান্য ক্লাসে ভর্তি ফি আরও বেশি।
জানা যায়, গত বছর যেহেতু সরাসরি ক্লাস হয়নি, তাই যেসব ফি অত্যাবশ্যকীয় নয় বা যা কোনো কাজে আসেনি, সেগুলো টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করতে বলেছিল মাউশি অধিদপ্তর। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা করেছে বলে শোনা যায়নি। উল্টো গত বছরের বেতন বকেয়া থাকলে তা পরিশোধে নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন সাতনদীকে জানান, টিউশন ফি মানে শিক্ষার্থীর মাসের বেতন। এ ছাড়া অন্য কোন খাতে কোন ফি আদায় করতে পারবেনা স্কুল কর্তৃপক্ষ। টিউশন ফির ক্ষেত্রে বিগত বছর যে হারে ফি নেওয়া হয়েছে সেই হারেই নিতে হবে। যদি কোন স্কুলে এর ব্যত্যয় ঘটে তাহলে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।