
সংবাদদাতা: সাতক্ষীরায় হোটেল মালিক ও বাবুর্চির কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নারী শ্রমিককে মারপিট ও খুন্তি দিয়ে ছ্যাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত ওই নারীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি ঘটনার প্রতিকার পেতে সোমবার সাতক্ষীরা সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। নির্যাতনের শিকার তিন সন্তানের জননীর (৩৮) বাড়ি আশাশুনি উপজেলার শীতলপুর গ্রামে।
আহত ভিকটিম জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লাবসা বাইপাস সড়কের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত হোটেল সিটি ইন–এ নারী শ্রমিক হিসেবে তিনি কয়েক মাস আগে কাজ নেন। প্রতিদিনের ন্যায় গত রবিবার হোটেল সিটি ইন–এ তিনি কাজে যান। কাজ করতে থাকার এক পর্যায়ে বাবুর্চি আজিজুল ইসলাম তাকে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তিনি বাঁধা দিলে তাকে মারপিট করে এবং গরম খুন্তি দিয়ে তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে ছ্যাকা দেয়া হয়। গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়ায় তার ডান স্তনের অর্ধেক অংশ পুড়ে গেছে। এছাড়া বুক, পিট, ঘাড় ও হাতের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় দাগ হয়ে গেছে। এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য হোটেল মালিক মফিজুল ইসলাম ও কবির হোসেন তাকে সারাদিন হোটেলের একটি রুমে আটকে রাখেন। এর ফলে তার শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়। এক পর্যায়ে সহকর্মীদের সহযোগিতায় সেখান থেকে পালিয়ে অন্যদের সহযোগিতায় তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ঘটনার পর থেকে হোটেল সিটি ইন–এর অভিযুক্ত বাবুর্চি আজিজুল ইসলাস পলাতক রয়েছে।
ভিকটিম আরও জানান, হোটেল সিটি ইনের দুই মালিক মফিজুল ইসলাম ও কবির হোসেন এবং বাবুর্চি আজিজুল ইসলাম প্রায়ই তাকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে ঘটনার দিন এভাবে মারপিট করা হয়েছে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই হোটেলের সাবেক কর্মী রওশান আরা ও বিউটি জানান, তাদের সাথেও একইরকম আচরণ করার এক পর্যায়ে তারা কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। তারা এর বিচার চান।
অভিযুক্ত বাবুর্চি আজিজুল ইসলামের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, ‘আমি নাসিমাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম। তখন সে আমাকে মারার জন্য উদ্যত হলে আমি মারপিট করেছি। সেও আমাকে মেরেছে। তিনি আরো জানান, আমি ভুল করেছি, আর কখনও এরকম কাজ করবো না’।
হোটেল সিটি ইন–এর মালিক মফিজুল ইসলাম ও কবির হোসেনের সাথে কথা হলে মোবাইল ফোনে তারা জানান, দূর্ঘটনা ঘটে গেছে। আগামীতে আর এরকম হবে না। তবে তারা হোটেলের নারী শ্রমিকদের যৌন নির্যাতনের বিষয়ে অস্বীকার করেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবির জানান, এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

