প্রেস বিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরায় খালাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে ইডেন কলেজের ছাত্রীকে ধর্ষনের পর চাপে পড়ে বিয়ে অতঃপর কৌশলে সন্তান হত্যা এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলার পাটকেলঘাটা থানার অভয়তলা গ্রামের শেখ জিয়াউর রহমানের মেয়ে ইডেন কলেজের ছাত্রী রেহেনা খাতুন এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি ঢাকা ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী। পাটকেলঘাটা থানার গৌরীপুর গ্রামের মৃত শেখ শামছুর রহমানের ছেলে খালাতো ভাই মুনজুর আলম ওরফে লিটু ও ইফতেখার আলম ওরফে কুদ্দুস আমার খালা অসুস্থ্য বলে ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ফুসলিয়ে আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। তাদের বাড়িতে থাকাকালে গভীর রাতে মুনজুর আলম ওরফে লিটু আমার কক্ষে ঢুকে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কয়েকবার আমাকে ধর্ষন করে। বিষয়টি খালাসহ অন্যদের জানালে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক আমাদের বিয়ের আশ্বাস দেন। কিছুদিন পর বুঝতে পারি আমার কনসেভ করেছে। বিষয়টি খালা ও স্বজনদের জানালে ডিসেম্বরে বিয়ে দিবে বলে ২৫ অক্টোবর তারা আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেয়। কিন্তু ২১ ডিসেম্বর লিটু আমাকে বিয়ে করবে না বলে জানায়। এসময় আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটি করলে পাটকেলঘাটা থানা ইমাম আব্দুল্লাহ’র মাধ্যমে রেজিষ্ট্রিবিহিন বিয়ে করে লিটু আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।
রেহেনা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, শশুর বাড়িতে যাওয়ার পর আমি লিটুকে বিয়ে রেজিষ্ট্রি করার কথা বললে সে তাল বাহানা শুরু করে। এ অবস্থায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি লিটু ও তার ভাই কুদ্দুস আমাকে বেদম মারপিট করে। আহত অবস্থায় আমি হাসপাতালে ভর্তি হই। এসময় আলট্রাসনোগ্রাফীতে আমার ফের কনসেভ করার বিষয়টি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় আমি পাটকেলঘাটা থানায় অভিযোগ করলে লিটু আমাকে রেজিষ্ট্রি বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং ১৮ ফেব্রুয়ারী কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে রেজিষ্ট্রি করে। এরপর থেকে লিটু আমার উপর শুরু করে অমানষিক নির্যাতন। যৌতুকের দাবিতে কথায় কথায় সে আমাকে মারপিট করতে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, যৌতুক লোভী লম্পট লিটুর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে জীবনে বাঁচাতে আমি পালিয়ে গিয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হই। এ সময় লিটু আমাকে খোলা তালাকনামা পাঠালে আমি গ্রহণ করিনি। পরে আমি বাবা’র বাড়িতে ফিরে আসলে লিটু সেখানে এসে গর্ভে সন্তান থাকা অবস্থায় ডিভোর্স হয় না, তাই তোর সন্তান নষ্ট করতে হবে বলেই আমার পেটে সজোরে লাথি মারেলে প্রচুর রক্তক্ষরন হয়। এ ঘটনার পর আমি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হই এবং সেখানে আমার সন্তানটি নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে লিটু তার ভাই কুদ্দুস সহ তার সহযোগিরা আমাকে খুন জখমের হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে আমি বাবা’র বাড়িতেও থাকতে পারছিনা। তাদের ভয়ে আমার পুরো পরিবার চরম উৎকন্ঠায় দিন যাপন করছে।
তিনি ওই লম্পট লিটু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।