
নিজস্ব প্রতবিদেক: সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরায় যতই দিন যাচ্ছে ততই করোনা সংক্রমনে মৃত্যুর মিছিল ভারী হয়ে উঠছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার উপসর্গ নিয়ে ৫ নারীসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এনিয়ে, জেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৩৮৬ জন। আর ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৬ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা শেষে ৪১ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। যা শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় আজ পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯০৮ জন। এদিকে, জেলার একমাত্র করোনা ডেডিকেটেড ২৫০ শয্যা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মোট ২৮৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। জনবল সংকটে সেখানে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের।
এদিকে, চলমান কঠোর লকডাউনের ৭ম দিনেও চলছে ঢিলেঢালাভাবে। লকডাউন উপেক্ষা করে শহরের হাট বাজার গুলোতে প্রচুর মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সড়ক গুলোতে অন্যান্য দিনের তুলনায় বেড়েছে মানুষের চলাচল। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সাধারন মানুষের মাঝে অনীহা দেখা গেছে। মানুষ যেন আইশৃখংলা বাহিনীর সাথে লুকোচুরি খেলছেন। অনেকেরই মুখে নেই কোন মাস্ক। সড়কে জরুরি পন্যবাহী পরিবহনের পাশাপাশি ছোট ছোট যান চলাচল করেেত দেখা গেছে। খোলা রয়েছে জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার গণপরিবহন। তবে, শহরের অধিকাংশ দোকান পাট আংশিক খোলা রেখে কেনা বেচা করছেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে করোনা আক্রান্ত পরিবারের লোকজন স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই ঘোরাঘুরি করছেন। ফলে করোনা সংক্রমন আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা করছেন সচেতন মহল। আইনশৃখংলাবাহিনীর সদস্যরা মোড়ে মোড়ে চেক পোষ্ট বসিয়ে চলাচল কিছুটা নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছেন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, লকডাউনের বিধি নিষেধ ভঙ্গ করায় জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ টি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৭৪ টি মামলায় ৩২ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া, গত ০৩ জুন থেকে এপর্যন্ত ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে মোট ১৩ লক্ষ ৮০ হাজার ৬৫০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। তিনি আরো জানান, জেলাবাসীকে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে ঘর থেকে বাইরে না বের হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন শাফায়াত জানান, জনসচেতনতার অভাবে মানুষ লকডাউন লঙ্ঘন করছেন। তবে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা জনসমাগম ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনা প্রতিরোধে তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ও মাস্ক পরার আহবান জানান।